আজকের দিন তারিখ ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব পুরুষের ছদ্মবেশে বাইক চালান বেলুচ নারী

পুরুষের ছদ্মবেশে বাইক চালান বেলুচ নারী


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ১৩, ২০২১ , ৩:১৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক : খাদিজাতুল কোবরা। সতেরো বছরের তরুণী। জন্মগতভাবেই পাকিস্তানের রক্ষণশীল নারীসমাজের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বেলুচিস্তানের কোয়েটা অঞ্চলে তার বাবার বাড়ি। প্রয়োজনের তাগিদেই তিনি এখন একটু একটু করে ভাঙছেন রক্ষণশীলতার দেওয়াল। মোটরবাইক চালিয়ে বাবাকে অফিসে পৌঁছে দেন, ভাইবোনদের স্কুলে আনা-নেওয়া করেন। নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করেন এই বাইক চালিয়েই। কোয়েটার রাস্তায় অসংখ্য যানের ভিড়ে কোথাও একজন নারী বাইকচালকের চিহ্ন নেই। কারণ, খাদিজা এ কাজটি করেন ছেলেদের ছদ্মবেশেই। আরব নিউজ।
বেলুচিস্তানে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছিল স্থানীয় একদল সশস্ত্র লোক। মেয়েরা যেন স্কুলে ঢুকতে না পারে, এ জন্য অস্ত্র হাতে স্কুল ঘিরে রাখত তারা। এমন প্রতিকূল পরিবেশেই লেখাপড়া করে এতদূর এগিয়েছেন খাদিজা। এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। শুধু তাই নয়, সামাজিক প্রথার সঙ্গে রীতিমতো সংগ্রাম করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এখানে পরিবহন সমস্যার কারণে অনেক মেয়ের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। বাধ্য হয়েই আমি বাইক চালাচ্ছি। ছদ্মবেশ ধারণ করেই আমি ছেলেদের ক্যাপ, গ্লাভস, জুতা, চশমা পরে এ কাজ করছি।’ ২০১৫ সাল থেকে খাদিজা হাইস্কুল পাশ করার পর বাইক চালানো শুরু করেন। এ ক্ষেত্রে তার হাতেখড়ি হয় তার বাবা স্কুলশিক্ষক গোলাম কাদির বাগতির কাছে। ১২ ভাইবোনের মধ্যে খাদিজা তৃতীয়। পরিবারের সবার পরিবহণ সমস্যা দূর করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে তাকে ২২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তার বাবা বলেন, ‘খাদিজা মাত্র ১০ বছর বয়সেই বাইক চালানোর উৎসাহ দেখিয়েছিল। পরে আমি বুঝতে পারি এর প্রয়োজন রয়েছে। আমার বাচ্চাদের স্কুলে যাতায়াত খরচ চালানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তখনই আমি ওকে এটা চালানো শিখিয়েছিলাম। কারণ আমি চাই, ওরা সবাই শিক্ষিত হোক।’ প্রথম প্রথম কিছুটা ভয় পেয়েছিলেন গোলাম কাদির। না জানি ধরা পড়ে কোনো ঝামেলা বেধে যায়, না জানি কোনো দুষ্টু ছেলের চোখে আটকে পড়ে সে। না, এখন পর্যন্ত এমনটি ঘটেনি।
খাদিজার জন্য স্বস্তির খবর হচ্ছে কোয়েটার রাস্তায় মেয়েদের বাইক চালানো সমর্থন করবে স্থানীয় পুলিশ। সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ গুল সাইদ খান আফ্রিদি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের আগ্রহী চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আমাদের অনেক মহিলা ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা কোয়েটার বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা মহিলা চালকদের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখছেন। যদি মেয়ে বাইকচালকের সংখ্যা বেড়ে যায়, অবশ্যই তাদের সুরক্ষা এবং সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশ দায়বদ্ধ থাকবে।’