বয়সে ২১ মাসের ছাড় পাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:৪৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে ডেস্ক : করোনা মহামারীর কারণে সরকারি চাকরিতে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বয়সে ২১ মাস ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাদের বয়স ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য সব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পাবেন। এ সময়ের মধ্যে যাদেরই বয়স ৩০ বছর হবে তারাও এই সুযোগ পাবেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ তৈরি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য আজ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হতে পারে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনার কারণে সরকারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত রয়েছে। চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষিত বেকারদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে তাদের বয়সে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাদের বয়স ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, তারা যাতে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আবেদন করতে পারেন- এমন একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি সাপেক্ষে এটি কার্যকর হলে চাকরিপ্রার্থীরা করোনাকালীন ২১ মাস বয়সের ছাড় পেতে পারেন।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে চাকরিপ্রত্যাশীদের পাঁচ মাসের বয়সের ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তবে ওই সময় শুধু ২৫ মার্চের আগে ছাড়পত্র পাওয়া নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু এবার সব ধরনের সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের এ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তার সম্মতি পাওয়া গেলে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। এরপর দিন দিন বাড়তে থাকে করোনা সংক্রমণ। করোনার কারণে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে দেশে টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি (লকডাউন) ছিল। মাঝে কিছুদিন বিরতি দিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আবারও শুরু হয়েছে বিধিনিষেধ (লকডাউন)। প্রায় দেড় বছর ধরে দেশে সরকারি চাকরির নিয়োগ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এর অধীনস্থ দফতরগুলোতে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫টি পদশূন্য রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকারি চাকরির মোট অনুমোদিত পদ রয়েছে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬৮টি। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছে ১৫ লাখ ৪ হাজার ৯১৩ জন। এর মধ্যে নারী ৪ লাখ ১৪ হাজার ৪১২ জন। শূন্য পদগুলোর মধ্যে প্রথম শ্রেণির পদ খালি ৪৬ হাজার ৬০৩টি, দ্বিতীয় শ্রেণির পদ রয়েছে ৩৯ হাজার ২৮, তৃতীয় শ্রেণির পদ রয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯০২ এবং চতুর্থ শ্রেণির পদ খালি রয়েছে ৯৯ হাজার ৪২২টি। এসব পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও করোনার কারণে পরীক্ষা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ সময়ের মধ্যে অনেকের চাকরির বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে। এ কারণেই ৩০ বছর পেরিয়ে যাওয়া প্রার্থীদের চাকরির আবেদনে ২১ মাসের সময় ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনার কারণে চাকরিপ্রার্থীদের বয়সে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুবই ভালো উদ্যোগ। করোনাকালে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষিত বেকাররা চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেনি, অথচ অনেকের চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়েছে। করোনার কারণে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সে ছাড় দেওয়া হলে চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’