আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মানাতে হবে

স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মানাতে হবে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ২৪, ২০২১ , ১২:৪৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। সরকার নির্দেশিত সব বিধিনিষেধ উপেক্ষিত। গতকাল ভোরের কাগজের প্রতিবেদনে প্রকাশ, গণপরিবহন, শপিংমল, দোকান, ফুটপাত, কাঁচাবাজার, বিনোদনকেন্দ্র ও টিকাদানকেন্দ্রসহ সামাজিক দূরত্ব মানছেন না কেউ। বিশেষ করে পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রী এবং বাস শ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। পরিবহন সেক্টরে এমন নৈরাজ্য নতুন নয়। সবসময় দেখতে পাই। সর্বশেষ লকডাউনে গত ২৩ জুলাই থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর ১১ আগস্ট থেকে শতভাগ যাত্রী নিয়ে আবার শুরু হয়েছে বাস চলাচল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কিছু শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে চালু হওয়া গণপরিবহনে কোনোভাবেই আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। এবং দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার বা কন্ডাক্টর, হেলপার কাম ক্লিনার এবং টিকেট বিক্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা যানবাহনের মালিকদের করতে হবে। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি-সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এ নির্দেশনা বাসচালক, হেলপার ও যাত্রীরা কেউ পালন করছেন না। দেখে যেন মনে হয় স্বাস্থ্যবিধি মানার চেয়ে নিয়ম ভাঙার প্রতিযোগিতায় সবাই ব্যস্ত। ঢাকা শহরের প্রায় ২ কোটি মানুষের ৮০ শতাংশই নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণিভুক্ত। এরা গণপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। করোনাকালীন এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে পরিবহন মালিকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। এতে করে সকালবেলা ঘর থেকে বেরিয়ে অফিসমুখী বাস ধরতে গিয়ে প্রতিদিনই অনাকাক্সিক্ষত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন কর্মজীবী মানুষ। পরিবহন খাতে এই নৈরাজ্য দিনের পর দিন চলতে পারে না। দেশে দিন দিন করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গণপরিবহন চলাচলে বিধিনিষেধসহ নানা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। করোনা দুর্যোগের কারণে এ সময়ে গণপরিবহনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্বাস্থ্য সতর্কতা অবলম্বন। গণপরিবহনগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তা কমই কার্যকর হতে দেখা যায়। অন্তত এ সময়ের জন্য হলেও নির্দিষ্ট আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতেই হবে। পাশাপাশি সংকটে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়ার ভোগান্তিটা যাত্রীসাধারণকে যেন পোহাতে না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তা পুষিয়ে নেন পরিবহন মালিকরা। সরকারকে সংঘবদ্ধ এই চক্রকে প্রতিহত করতে এগিয়ে আসতে হবে। যাত্রীসাধারণের বৃহত্তর স্বার্থেই অবিলম্বে এই অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। কেবল সরকারের সতর্কতাই যথেষ্ট নয় বরং আমরা মনে করি, বাস মালিক সমিতিসহ চালক ও যাত্রী সবারই সচেতন হওয়া জরুরি। গণপরিবহনে যাত্রী ওঠার ক্ষেত্রে যেভাবে হুড়াহুড়ি করে বাসে উঠতে দেখা যায়, তা বন্ধ করতে হবে।