পানশিরে ২০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত: বিবিসি
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১ , ২:২০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে ডেস্ক : আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পানশিরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে তালেবান ও ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) তুমুল যুদ্ধে অন্তত ২০ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি বিবিসির এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। উভয় পক্ষের তুমুল সংঘর্ষের পর পানশির ভ্যালিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও তালেবানের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে নানা তথ্য জানাচ্ছে বিবিসি, যেখানে তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা বিরোধীদের সাধারণ ক্ষমা করেছেন। পানশির থেকে আসা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সড়কে সামরিক পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তিকে ঘিরে রেখেছেন তালেবান যোদ্ধারা। হঠাৎ গুলির আওয়াজ পাওয়া যায় আর ওই ব্যক্তি তখন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি সামরিক ব্যক্তি ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি, কারণ সেখানে সাধারণ নাগরিকরাও সামরিক পোশাক পরে ঘুরেন। তবে ওই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জোর দিয়ে বলছেন, নিহত ব্যক্তি সাধারণ নাগরিকই ছিলেন। এই পর্যন্ত পানশিরে যে ২০ জন নিহত হয়েছেন, তাদের একজন হলেন আবদুল সামি। পেশায় দোকানদার সামি ছিলেন দুই সন্তানের জনক। প্রত্যক্ষদর্শীরা সামি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে বিবিসিকে বলেন, সামি বারবার বলছিলেন, তিনি একজন গরীব দোকানদার। তিনি বিদ্রোহীদের যুদ্ধের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। কিন্তু তালেবান যোদ্ধারা সেসব কথা শুনতে নারাজ। বিদ্রোহীদের কাছে মোবাইলের সিম কার্ড বিক্রয়ের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের ক’দিন পর সামির বাড়ির কাছ থেকে সামির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সামিকে ‘নিষ্ঠুর নির্যাতনের’ পর হত্যা করা হয়েছে। তবে বেসামরিক নাগরিকদের নাগরিকদের হত্যার কথা অস্বীকার করেছে তালেবান। পানসির উপত্যকা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জনজীবনে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করছে তালেবান। তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র আবদুল্লাহ রাহমানি বিবিসিকে বলেন, ‘মানুষদের বাইরে আসা উচিত, তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম করা উচিত। যদি তারা দোকানদার হয়, তবে তারা তাদের দোকানে যেতে পারে। যদি তারা কৃষক হয় তবে তারা তাদের খামারে যেতে পারে। আমরা এখানে তাদের, তাদের জীবন এবং তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে এসেছি।” চলতি বছর আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের প্রায় সব অঞ্চল দখল করে ফেললেও পানশির উপত্যকার দখল নিতে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ বাধিয়েছে তালেবান। সম্প্রতি তীব্র যুদ্ধের পর পানশির উপত্যকা নিজেদের নিয়ন্ত্রাধীন বলে দাবি করেছে উভয়পক্ষ। আহমাদ শাহ মাসউদের নেতৃত্বে এনআরএফ বলেছে, তালেবানের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় বিদ্রোহ’ তারা অব্যাহত রাখবে। পানশিরের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, এলাকা এখন একেবারেই জনশূন্য হয়ে পড়েছে। মানুষ এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন। পানশিরের সড়কগুলোতে যানবাহনের দীর্ঘ জট লেগেই থাকছে। গত ২১ বছর ধরে মার্কিন সেনা ও কর্মকর্তাদের সহায়তাকারী আফগান নাগরিকদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেও পরিস্থিতি ভিন্ন কথা বলছে। আফগানিস্তানে নানা প্রান্তে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কবি,পুলিশ কর্মকর্তা ও সংখ্যালঘুদের তালেবান যোদ্ধারা হত্যা করছে বলে অভিযোগ আসছে।