আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য চাঙ্গা রপ্তানি খাত, অক্টোবরে রেকর্ড আয়

চাঙ্গা রপ্তানি খাত, অক্টোবরে রেকর্ড আয়


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: নভেম্বর ৩, ২০২১ , ২:৪৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে ডেস্ক :   মাহামারি করোনার প্রভাব কাটিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠছে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত। প্রত্যাশিত আয় ছাড়িয়ে একক মাসে গড়েছে দেশের রপ্তানি আয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড। গেলো অক্টোবর মাসে ৪৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার (৪.৭৩ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ​এই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৩৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ৪০ হাজার ৫১৫ টাকা। মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত রপ্তানি তথ্যে দেখা যায়, একক মাস হিসাবে অক্টোবর মাসে গেলো বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, এক মাসে এত বেশি রপ্তানি আয় আর কখনও দেশে আসেনি। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজার চাঙ্গা হয়েছে। আগামী কয়েক মাস পোশাকের রপ্তানি চিত্র ভালো থাকবে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এর আগে গত সেপ্টেম্বরেও একক মাসে রেকর্ড পরিমাণ ৪১৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। সব মিলিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ১ হাজার ৫৭৫ কোটি (১৫.৭৫ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন রপ্তানিকারকরা। লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি থেকে মোট ১ হাজার ১৬২ কোটি ১১ লাখ (১২.৬২ বিলিয়ন) ডলার দেশে এসেছে। যা মোট রপ্তানির ৮০ দশমিক ১৩ শতাংশ এই চার মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মঙ্গলবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৪৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার আয় করেছে।

২০২০ সালের অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি থেকে ২৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। আর অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে মোট ১ হাজার ৫৭৫ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশ। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পণ্য রপ্তানি থেকে ১ হাজার ২৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার আয় হয়েছিল। যেখানে লক্ষ্য ধরা ছিল ১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার (১৩.৮৯ বিলিয়ন) ডলার। তিন মাসে মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। চার মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

এই চার মাসে নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। উভেনে বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। তবে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত মাছ, কৃষি পণ্যসহ অন্য সব খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ২২ কোটি ৩০ লাখ ডলার আয় হয়েছে। গত বছরের এই চার মাসে আয় হয়েছিল ৪৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪৫ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, জুলাই-অক্টোবর সময়ে পাট খাতের রপ্তানি আয় কমেছে ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। এই চার মাসে হিমায়িত মাছ রপ্তানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। কৃষিপণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৬০ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২ ৯দশমিক ০৪ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল রপ্তানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬৫ শতাংশ। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের মোট লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা আছে ৩৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।