বন্যায় পাকিস্তানে জরুরি অবস্থা জারি, নিহত ৯৩৭
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ২৬, ২০২২ , ২:৪০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে ডেস্ক : প্রবল বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। বন্যায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৩৭ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৩৪৩ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া বন্যায় বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ৩ কোটি মানুষ। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশটিতে চলমান অবিরাম বৃষ্টিপাতকে ‘জলবায়ু-জনিত বিরাট মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করে পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এনডিএমএ) সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলমান এই বন্যায় দেশটির সিন্ধ প্রদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ জুন থেকে প্রদেশটিতে এখন পর্যন্ত বন্যা এবং বৃষ্টি-সম্পর্কিত নানা ঘটনায় ৩০৬ জন মারা গেছেন।
এদিকে বন্যায় পাকিস্তানের আরেক প্রদেশ বেলুচিস্তানে ২৩৪ জন মারা গেছেন। এছাড়া খাইবার পাখতুনখোয়া এবং পাঞ্জাব প্রদেশে যথাক্রমে ১৮৫ ও ১৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। পাকিস্তানশাসিত আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরে ৩৭ জন নিহত হয়েছেন এবং বৃষ্টিতে গিলগিট-বালটিস্তান অঞ্চলে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। একই সময়ে ইসলামাবাদে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এনডিএমএ-তে একটি ‘ওয়ার রুম’ স্থাপন করেছেন। এটি সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তিনি স্বীকার করেছেন, অবিরামভাবে চলা ‘অবিশ্বাস্য’ এই বৃষ্টিপাত ‘ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন করে তুলেছে, বিশেষ করে দুর্গত এলাকায় হেলিকপ্টার যাতায়াত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে’।
এনডিএমএ’র তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানে আগস্ট মাসে ১৬৬.৮ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বছরের এই সময়টিতে সেখানে গড়ে ৪৮ মিমি বৃষ্টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ চলতি আগস্ট মাসে দেশটিতে বৃষ্টিপাত ২৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমান বন্যায় পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল সিন্ধ ও বেলুচিস্তানে মৌসুমী বৃষ্টি যথাক্রমে ৭৮৪ শতাংশ এবং ৪৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানিয়েছে এনডিএমএ। মূলত বৃষ্টিপাতের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সারা দেশে, বিশেষ করে পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি করেছে। এসব অঞ্চল এই মুহূর্তে প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে এবং সিন্ধ প্রদেশের ২৩টি জেলাকে ‘দুর্যোগ-আক্রান্ত’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে প্রবল বর্ষণের পর মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় আফগান প্রদেশগুলোতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৮২ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও আড়াইশো জন। একইসাথে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, চলতি মাসে আফগানিস্তানে বন্যায় ১৮২ জন নিহত এবং ২৫০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৩ হাজার ১০০টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং হাজার হাজার গবাদি পশু নিহত হয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।