আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং : উপকূলে ৭ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত, লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং : উপকূলে ৭ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত, লঞ্চ চলাচল বন্ধ


পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ২৪, ২০২২ , ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে রূপ নিয়েছে। বারবার পরিবর্তন করছে গতিপথ। ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে। উপকূলীয় জেলাগুলো উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভোররাত থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এরসঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া। এ পরিস্থিতিতে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর সতর্কসংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অফিস থেকে। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলাসহ সব রুটের লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলের কয়েক হাজার আশ্রয়কেন্দ্র।

উপকূলের নিম্নাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার পর্যন্ত অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আজকের মধ্যে আবারও বরিশাল ও নোয়াখালীর দিকে মুখ করে এগোতে পারে। এদিকে স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ‘সিত্রাং’র প্রভাবে বরিশালে আজ সোমবার সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টি চলছে। মাঝেমধ্যে দমকা বাতাস বইছে।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহেল মারুফ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বরিশাল জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি শুকনো খাবারসহ জরুরি পণ্য মজুদ রেখেছে। ‘সিত্রাং’ মোকাবিলায় বরিশাল জেলায় ১ হাজার ৫১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সেখানে ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। একই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করাসহ জেলার সব স্থানে মাইকিং ও আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বরিশাল নদীবন্দর থেকে ১২ রুটে একতলা লঞ্চ ও স্পিড বোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও, ভোলায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটের সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ওদিকে চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চাঁদপুরে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সোমবার ভোররাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য। জেলার মতলব উত্তর, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ১২১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চাঁদপুর নদী বন্দর কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, সিত্রাং মোকাবেলায় চাঁদপুর নদী বন্দর এলাকায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমন্বয় করবেন। অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আজকে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। বৈরী আবহাওয়া পরিস্থিতিতে আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে এবং সকাল থেকে চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। চাঁদপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়্যারলেস সুপারভাইজার মো. সোয়েব জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের চাঁদপুরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৫.৬। আপাতত ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে।