বরিশাল অফিস : বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততোই জমে উঠছে প্রচার প্রচারণা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা। কে হচ্ছেন পরবর্তী নগরপিতা? এমন আলোচনাই বেশি। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের ঘিরেই সবর নির্বাচনী মাঠ। তবে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থাকায় তাদের ভোট ভাগ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন দলটির নেতাকর্মীরা। অবশ্য বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বরিশালে তাদের চাপা ভোটে জয়ী হতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন এমনটিও বলছেন কেউ কেউ। তবে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ গত ৫ বছরে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামীলীগেরও অবস্থান শক্ত-পোক্ত করেছেন। এছাড়া আগামী ২৬ মে আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দক্ষিণ বাংলা আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর দিক নির্দেশনায় অভ্যন্তরীণ সকল দ্বন্দ্বের অবসান হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। সেই ক্ষেত্রে একজোট হয়ে মাঠে নামলে নৌকার বিজয় নিশ্চিত হবে বলে দাবী নেতাকর্মীদের। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। বেজে উঠেছে নির্বাচনের ডামাডোল। নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে নগরীর পাড়ামহল্লা, চায়ের স্টলে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। গুঞ্জন চলছে কে হচ্ছেন মেয়র, আর কে হচ্ছেন সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর। চলছে প্রচার-প্রচারণা, ঘরোয়া বৈঠক ও মতবিনিময়। তবে আগামী ২৬ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পরই মূলত আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরু হবে। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা নগরীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তাদের নির্বাচনী কার্যালয় স্থাপন করেছেন। এক্ষেত্রে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ এগিয়ে। নগরীর প্রায় সবক’টি ওয়ার্ডেই তাদের নির্বাচনী কার্যালয় স্থাপন সম্পন্ন করেছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই নৌকার অফিসে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়।
পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টিও। তারাও একাধিক ওয়ার্ডে তাদের নির্বাচনী কার্যালয় স্থাপন করেছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাকের পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোন কার্যালয় এখনো দেখা যায়নি। তবে তারা জানিয়েছেন, প্রস্তুতি রয়েছে তাদেরও। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই তারাও নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন। এদিকে নৌকার বিজয়ে এরই মধ্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক বিসিসি নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এ উপলক্ষে আগামী ২৬ মে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। নেতাকর্মীদের দেওয়া হবে দিক নির্দেশনা। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে যে সকল বিরোধ ছিল তা নিরসন হবে। এমন দাবী করছেন স্থানয়ী আ’লীগের নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বরিশাল মহানগর আ’লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট কেবিএস আহমেদ কবির বলেন, আমরা ২৬ তারিখের বিশেষ বর্ধিত সভার দিকে তাকিয়ে আছি। আশা করছি ওই সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সকলকে ঔকবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহবান জানাবেন। এতে করে নেতাকর্মীদের মাঝে যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল তা দূর হবে। আর নৌকার বিজয় হবে সুনিশ্চিত। এদিকে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সমন্বয় সভা করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। গত রবিবার বিএমপি হেডকোয়ার্টার্স এর সম্মেলন কক্ষে পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম বিপিএম-বার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সকলের পারষ্পরিক সহযোগিতায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়া জনসাধারণ যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে লক্ষ্যে উপস্থিত সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।