আজকের দিন তারিখ ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বিনোদন যত বাংলাদেশি তারকা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন

যত বাংলাদেশি তারকা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ , ১২:২৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: বিনোদন


দিনের শেষে প্রতিবেদক : বাংলাদেশের বড় ও ছোট পর্দার অনেক জনপ্রিয় নায়িকা একসময় বিদেশ পাড়ি জমান এবং প্রবাসী হিসেবে সেখানেই থিতু হন। শোবিজে এমন বেশ কয়েকজন নায়িকার হলেন-
শাবানা যুক্তরাষ্ট্রে : মাত্র নয় বছর বয়সে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আজিজুর রহমানের হাত ধরে চিত্রজগতে অভিষেক শাবানার। ১৯৬১ সালে চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে নাম লেখান তারই পরিচালনার ‘নতুন সুর’ ছবিতে। এরপর ১৯৬৬ সালে ইবনে মিজানের ‘আবার বনবাসে রূপবান’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে এবং মুস্তাফিজের ‘ডাক বাবু’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে কাজ করেন তিনি। এহতেশামই ১৯৬৮ সালে তার ‘চকোরী’ ছবিতে প্রধান নায়িকা হিসেবে তাকে কাস্ট করেন। ‘চকোরী’তে প্রধান নারী চরিত্রে নায়ক নাদিমের বিপরীতে লাস্যময়ী তরুণীর সাবলীল অভিনয় দিয়ে শাবানা নজর কাড়লেন দর্শকদের। ১৯৬৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শুধু তার নামেই ছবি চলত। ১৯৯৭ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ ছবিই তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র। ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে সপরিবারে থিতু হন। শাবানা মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মকর্ম আর সংসারের কাজ নিয়েই কাটছে ঢাকাই ছবির বিউটি কুইন খ্যাত জনপ্রিয় নায়িকা শাবানার প্রবাসজীবন।
অঞ্জু ঘোষ কলকাতায় : ১৯৮২ সালে ফোক ফ্যান্টাসি এবং রোমান্টিক ছবির নামি নির্মাতা এফ কবির চৌধুরী যখন ‘সওদাগর’ ছবিতে নতুন মুখ উপহার দেন চট্টগ্রামে মঞ্চনাটকে অভিনয় করা শিল্পী অঞ্জু ঘোষকে, এরপর জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে ঢাকার ছবিতে দাপিয়ে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতা চলে যান এবং সেখানকার চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করে যান। পাশাপাশি সেখানকার যাত্রাপালাতেও অভিনয় করতে থাকেন। ২০০৪ সালের দিকে কলকাতার বড় পর্দায় তার চাহিদা কমলেও যাত্রাপালায় সরব ছিলেন এ অভিনেত্রী। ২০০৮ সাল পর্যন্ত যাত্রামঞ্চ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। কাজের ফাঁকে ২০০২ সালে বিয়ে করেন সহশিল্পী সঞ্জীবকে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত টিকেছিল অঞ্জু-সঞ্জীবের সংসার। একসময় অসহায় ও একাকী জীবন কাটাতে থাকেন অঞ্জু ঘোষ। বর্তমানে অঞ্জু ঘোষের সময় কাটে ধর্ম আর সংগীতচর্চা করে। তিনি থাকেন কলকাতার সল্টলেক এলাকায়।
জয়শ্রী কবির যুক্তরাজ্যে : প্রখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা আলমগীর কবির ১৯৭৪ সালে তার ‘সূর্যকন্যা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য কলকাতার অভিনেত্রী জয়শ্রী রায়কে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৫ সালে। এ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রথম স্ত্রী মঞ্জুরা বেগমের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ১৯৭৫ সালেই আলমগীর কবির বিয়ে করেন জয়শ্রীকে। বিয়ের পর জয়শ্রী রায় হয়ে যান জয়শ্রী কবির। ১৯৭৮ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি। বিচ্ছেদের পর প্রথমে পাড়ি দেন কলকাতায়। সেখান থেকে পরে চলে যান লন্ডনে। সেখানেই প্রবাসী হন তিনি। লন্ডনের সিটি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষাদান করছেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের রেইনবো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের একজন সম্মানিত সদস্য ও গুণী বিচারক হিসেবেও কাজ করেন তিনি।
শাবনূর অস্ট্রেলিয়ায় : প্রখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা এহতেশাম ১৯৯৩ সালে তার ‘চাঁদনী রাতে’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে ব্রেক দেন শাবনূরকে। এরপর ২০১৩ সাল পর্যন্ত তুমুল জনপ্রিয়তার সঙ্গে তিনি নিয়মিত অভিনয় করে যান। ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী ও তার সহশিল্পী অনিক মাহমুদের সঙ্গে শাবনূরের আংটি বদল হয় এবং ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকেই তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন ও সেদেশের নাগরিকত্ব পান। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি অস্ট্রেলিয়াতেই একটি ছেলে সন্তানের মা হন। মাঝেমধ্যে দেশে এলেও অস্ট্রেলিয়াতেই কাটে তার জীবনের বেশি সময়। বর্তমানে তিনি দেশে আছেন।
মোনালিসা যুক্তরাষ্ট্রে : ২০০০ সালের শুরু থেকে মডেল হিসেবে মিডিয়ায় কাজ শুরু করেন মোজেজা আশরাফ মোনালিসা। পরে টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনে কাজ করে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। একসময় এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে তিনি যুক্তরাস্ট্রে বসবাস শুরু করেন। সেই বিয়ে অবশ্য অল্প সময় টিকেছিল। মোনালিসা যুক্তরাস্ট্রের একটি চেইনশপে চাকরিও করেন।
শ্রাবন্তী যুক্তরাষ্ট্রে : শ্রাবন্তী মডেলিং দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। শ্রাবন্তী ২০১০ সালে মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আলম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তাদের দুই কন্যা রাবিয়াহ আলম ও আরিশা আলম। ২০১০ সালে সন্তানদের জন্মের পর অভিনয় ছেড়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি ওয়ালমার্টে কিছুদিন কাজ করার পর চাকরি ছেড়ে দেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জ্যামাইকার অ্যালেন স্কুল অব হেলথ সায়েন্স থেকে মেডিকেল সহকারীর স্বল্পমেয়াদি একটি কোর্স করেন।
শ্রাবন্তী দত্ত তিন্নি কানাডায় : নব্বই দশকে অভিনয়ে আসা শ্রাবন্তী দত্ত তিন্নি ২০০৬ সালে প্রথম অভিনেতা আদনান ফারুক হিল্লোলকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের একটি মেয়ে রয়েছে, নাম ওয়ারিশা। হিল্লোলের সঙ্গে তালাকের পর ২০১৪-এ তিনি আদনান হুদা সাদকে বিয়ে করেন। এরপর তিনি পরিবারের সঙ্গে কানাডার কুইবেক প্রদেশে বসবাস করছেন।
রোমানা যুক্তরাষ্ট্রে : মডেল রোমানা টিভি নাটকের পাশাপাশি কাজ করেছেন একাধিক সিনেমায়ও। রোমানা প্রথম বিয়ে করেন উপস্থাপক ও নির্মাতা আনজাম মাসুদকে।
আনজামের সঙ্গে সংসার ভেঙে যাওয়ার পর তিনি বিয়ে করেন সাজ্জাদ নামের ঢাকার এক ব্যবসায়ীকে। কিন্তু ধীরে ধীরে রোমানা-সাজ্জাদের দাম্পত্যজীবনে টানাপোড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে। এর পরপরই রোমানা দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর ব্যবসায়ী এলিন রহমানের সঙ্গে তার পরিচয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৭ আগস্ট ২০১৫ তারিখে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনা হলে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। তাদের ঘরে একটি কন্যা
সন্তানও রয়েছে। রোমানা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জ্যামাইকায় বসবাস করছেন।
রিচি সোলায়মান যুক্তরাষ্ট্রে : জনপ্রিয় অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান। দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তিনি। টেলিভিশন পর্দা থেকেও দূরে।
গত বছরের শুরুতে বাংলাদেশে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ঢাকায় এসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে সংসার-সন্তান নিয়েই তার ব্যস্ততা। তবে মাঝেমধ্যে হুটহাট দেশে ফেরেন। পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আবার ফিরে যান। সেই সঙ্গে ঢুঁ মারেন শোবিজপাড়ায়, হাজিরা দিয়ে যান দর্শকের কাছে।
আরও যারা…
শান্তা ইসলাম [যুক্তরাষ্ট্রে], লুৎফন নাহার লতা [যুক্তরাষ্ট্রে], কাজী মারুফ [যুক্তরাষ্ট্রে], তামান্না [সুইডেন], মাহাবুবুল ইসলাম সুমী [যুক্তরাষ্ট্রে], বিপাশা-তৌকীর [যুক্তরাষ্ট্রে], ইমন সাহা [যুক্তরাষ্ট্রে], বিপ্লব [যুক্তরাষ্ট্রে],
অগ্নিলা [কানাডায়], আমব্রিন [কানাডায়], দিলরুবা ইয়াসমিন রুহী [যুক্তরাষ্ট্রে], স্বাধীন খসরু [যুক্তরাজ্যে], কাজী উৎপল যুক্তরাষ্ট্রে], তমালিকা কর্র্মকার (যুক্তরাষ্ট্র),
টনি ডায়েস (যুক্তরাষ্ট্রে), প্রিয়া ডায়েস (যুক্তরাষ্ট্রে), হিল্লোল (যুক্তরাষ্ট্রে), নওশীন (যুক্তরাষ্ট্রে), রিয়া (যুক্তরাষ্ট্রে)।।