৬ ছাত্রনেতার ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যা জানা গেল
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪ , ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////,জাতীয়
দেশের ছয় ছাত্রনেতার ওপর ভারত ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিকে ‘ভুয়া খবর’ বলে আখ্যায়িত করেছে ভারত। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় বাংলাদেশি ছাত্র নেতার ওপর ভারত ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে বাংলাদেশি মিডিয়ার একাংশের প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘ভুয়া খবর’ বলে রবিবার ভারতের সরকারি সূত্র জানিয়েছে। বাংলাদেশি মিডিয়ার একাংশের প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়েছে, ‘ভারত-বিরোধী’ মনোভাব জাগানোর জন্য ওই ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে ভারত এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, নয়াদিল্লির সরকারি বেশ কয়েকটি সূত্র এই প্রতিবেদনগুলোকে ভুয়া খবর বলে আখ্যায়িত করেছে।
এর আগে ‘ছয় ছাত্রনেতার ওপর ভারতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা’ শীর্ষক একটি সংবাদ গতকাল রবিবার প্রকাশ করে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর এশিয়া। এতে সংবাদমাধ্যমটি দাবি করে, ভারতবিরোধী জনতাকে উসকে দেয়া ও ভারতের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে বাংলাদেশের ছয় ছাত্রনেতা ও তাদের ঘনিষ্ঠজনদের ভিসা না দেয়ার জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নুসরাত তাবাসসুম।
দিল্লিতে কর্মরত ভারতীয় গণমাধ্যমের কয়েকজন সাংবাদিক দ্য মিরর এশিয়াকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। এমনকি ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত মৌখিক নির্দেশনা ঢাকাস্থ ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে পাঠানো হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করে দ্য মিরর এশিয়া।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম জানান, ভারতের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ে থাকলে বা সত্য হলেও সেটাকে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ‘দ্য মিরর এশিয়ার নিউজটা ছাড়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমি আসলে কিছুই জানি না বা কিছু শুনিনি। এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান হাই কমিশনার থেকেও আমাদেরকে কিছু জানানো হয়নি, দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিও কিছু জানায়নি। এই সমন্বয়ক বলেন, ‘আপনারা সবাই যেমন মিরর এশিয়ার খবরটা দেখেছেন অনলাইনে, আমিও সেরকমই দেখেছি। এর বেশিকিছু জানি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা সত্য কিনা সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ে থাকলেও বা সত্য হলেও সেটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এই নিষেধাজ্ঞায় আমাদের কিছু আসে যায় না। কারণ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান স্পষ্ট। এ জন্য, যদি নিষেধাজ্ঞা দিয়েও থাকে তাহলে মনে করছি যে, এতে আমাদের আন্দোলন পূর্ণতা পেল।’
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গত মাসের ৫ তারিখে পদত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। সেখান থেকে সম্ভবত আশ্রয়ের জন্য অন্য কোনো দেশে যেতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে হাসিনাকে আশ্রয় না দেয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তার ভারতে চলে যাওয়ার পরপরই যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, তাদের যে অভিবাসন আইন রয়েছে; সেখানে কোনো ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করে এসে রাজনৈতিক বা সাধারণ আশ্রয় নেয়ার বিধান নেই। এছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।