আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্পোর্টস ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে শেষ চারে ফ্রান্স

ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে শেষ চারে ফ্রান্স


পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ১১, ২০২২ , ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস


স্পোর্টস ডেস্ক : ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে শেষ চারে ফ্রান্স পেনাল্টি স্পট থেকে গোল করে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন হ্যারি কেইন। কিছুক্ষণ পর অধিনায়কেরই পেনাল্টি মিসে স্বপ্নভঙ্গ হলো ইংল্যান্ডের। অন্যদিকে দুই অর্ধে দুই গোল করে জয় তুলে নিল ফ্রান্স। এই জয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেল বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা; যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো।
২০২২ বিশ্বকাপের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে আজ ২-১ গোলে জয় তুলে নিয়েছে ফরাসিরা। আল বায়িত স্টেডিয়ামে অহেলিয়া চুয়ামেনির গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় দিদিয়ে দেশমের দল। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ করেন ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ড কেইন। কিন্তু ফ্রান্সকে ফের এগিয়ে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অলিভিয়ে জিরুদ। এরপর সুযোগ পেয়েও পেনাল্টি মিস করেন কেইন। ফলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল ফরাসিরা। তবে ১৯৮২/১৯৮৬-এর পর এই প্রথম টানা দ্বিতীয়বার শেষ চারে উঠার স্বাদ পেল তারা। অন্যদিকে এবার নিয়ে সপ্তমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিল ইংল্যান্ড। ইতিহাসে এতবার শেষ আট থেকে বিদায় নেওয়ার রেকর্ড নেই আর কোনো দলের। প্রথমার্ধে ফ্রান্সকে কিছুটা চাপেই রেখেছিল ইংল্যান্ড। তবে সুযোগ প্রথম আসে ফ্রান্সের সামনেই। একাদশ মিনিটেই ভালো সুযোগ পায় ফ্রান্স। দেম্বেলে থেকে পাওয়া বল বক্সে ক্রস দেন গ্রিজমান। সেখানে থেকে হেডও নেন জিরুদ। তবে ইংলিশ গোলরক্ষকের কারণ সেটি ঠেকিয়ে দেন। সপ্তদশ মিনিটে ঠিকই এগিয়ে যায় ফরাসিরা। ডান দিক থেকে গ্রিজমানকে খুঁজে নেন এমবাপ্পে। আতলেটিকোর এই ফরোয়ার্ড বল বাড়ান চুয়ামেনির উদ্দেশ্যে। বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে জাল খুঁজে নেন রিয়ালের এই মিডফিল্ডার। সমতায় ফিরতে মরিয়া ইংল্যান্ড সুযোগ পায় ২২তম মিনিটে। সাকার বাড়ানো পাস থেকে বল টেনে নিতে ব্যর্থ হন হ্যারি কেইন। তবে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার থেকে সেটি ঠিকই সংগ্রহ করে নেন হেন্ডারসন। যদিও তার দেওয়া পাস বেলিংহাম ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেনি। ২৯তম মিনিটে কেইনের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান লরিস। ফলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ পার করে ফ্রান্স। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই সমতায় ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালায় ইংল্যান্ড। ৪৭তম মিনিটে বেলিংহ্যামের ভলি কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান ফরাসি গোলরক্ষক লরিস। এর মিনিট ৫ মিনিট পরেই সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। ডান প্রান্ত দিয়ে বেলিংহ্যামের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে ঢুকে পড়েছিলেন সাকা। তাকে থামাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন চৌমেনি। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্পটকিক থেকে লক্ষ্যভেদ করেন কেইন। এটি ইংল্যান্ডের জার্সিতে তার ৫৩তম গোল। তার সমান গোল আছে শুধু সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকার ওয়েইন রুনির। তাছাড়া বিশ্বকাপের ইতিহাসেই কেইনের চেয়ে বেশি পেনাল্টি থেকে গোল (৪) করেননি আর কেউই। সমতায় ফেরার পর বেশ কয়েকটি সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। ৭০তম মিনিটে জর্ডান হেন্ডারসনের ফ্রি-কিকে হেড নেন হ্যারি ম্যাগুইর, কিন্তু বল বারে লেগে বেরিয়ে যায়। দুই মিনিট পর সাকার দারুণ এক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এর কিছুক্ষণ পর ইংল্যান্ডকে বড় ধাক্কা দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন জিরুদ। এবার আতোয়াঁ গ্রিজমানের কর্নার কিক ক্লিয়ার হয়েও তার কাছেই ফিরে যায়; দারুণ এক ক্রসে এই ফরাসি ফরোয়ার্ড ক্রস দেন জিরুদের দিকে। সেখানে থাকা ইংলিশ ডিফেন্ডার ম্যাগুইয়রকে পরাস্ত করে দারুণ হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন ফরাসি স্ট্রাইকার। ৩৬ বছরের বেশি বয়সে এক বিশ্বকাপের ৪ গোল করা মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় এখন জিরুদ। এর আগে ১৯৯০ বিশ্বকাপে সমানসংখ্যক গোল করার সময় কামেরুনের কিংবদন্তি রজার মিলারের বয়স ছিল ৩৮ বছর। ম্যাচের শেষ ভাগে পেনাল্টি আদায় করে নেয় ইংল্যান্ড। বল আসার আগেই ম্যাসন মাউন্টকে নিজেদের বক্সে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন ফরাসি ডিফেন্ডার থিও এরনঁদেজ। শুরুতে রেফারি কোনো সিদ্ধান্ত না দিলেও ইংলিশ খেলোয়াড়দের ক্রমাগত আবেদনে সাড়া দিয়ে ভিএআর দেখার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর রিপ্লে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। কিন্তু এবার আর কাজে লাগাতে পারলেন না কেইন। বরং কিছুটা সময় নিয়ে নেওয়া তার শট বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। সেই সঙ্গে অদ্ভুত রেকর্ডে নাম লেখান কেইন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে একই ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করার পাশাপাশি পেনাল্টি মিস করলেন তিনি। এর আগে ১৯৯০ বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে এমন রেকর্ড গড়েছিলেন সাবেক চেকোস্লোভাকিয়ার মিশাল বিলেক।

কেইনের ওই মিসের পর ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে যায় ইংল্যান্ড। তবে যোগ করার সময়ের একদম শেষ মিনিটে বক্সের সামনে ফ্রি-কিক উপহার পেয়েছিল তারা। কিন্তু বদলি নামা মার্কাস রাশফোর্ডের নেওয়া শট পোস্টের ওপর দিয়ে যায়। ফলে ইংল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। আর সেমিতে উঠে যায় ফ্রান্স।