আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
Uncategorized, অর্থ ও বাণিজ্য ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের মজুদ কমেছে

ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের মজুদ কমেছে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৭, ২০২০ , ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: Uncategorized,অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : চলতি বছরের শুরু থেকে নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর সঙ্গে লড়াই করেছে চীন। এ সময় দেশটির আমদানি-রফতানি কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছিল। প্রধান ক্রেতা চীনের এ পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছিল ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানিকারকদের। পণ্যটির রফতানি কমার আশঙ্কা করেছিলেন তারা। পরবর্তী সময়ে ইন্দোনেশিয়া নিজেও করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে রফতানিকারকদের ওই আশঙ্কা বাস্তব হয়েছে। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসার তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর জের ধরে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি ও ফেব্রয়ারি) ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম অয়েল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় এক-পঞ্চমাংশ কমে গেছে। খবর জাকার্তা পোস্ট ও বিজনেস ইনসাইডার।ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদক। পণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায়ও দেশটি শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। পাম অয়েলের বৈশ্বিক রফতানি বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া মিলিতভাবে জোগান দেয়। এ কারণে এ দুই দেশে পাম অয়েলের উৎপাদন ও রফতানিতে উত্থান-পতন আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৪৯ লাখ ৩০ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ বা প্রায় এক-পঞ্চমাংশ কম। ২০১৯ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রয়ারিতে ইন্দোনেশিয়ার রফতানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৬১ লাখ ৩০ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি করেছিলেন। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি কমেছে ১২ লাখ টন। ইন্দোনেশিয়া থেকে রফতানি হওয়া পাম অয়েলের প্রধান ক্রেতা চীন ও ভারত। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীন ও ভারত—উভয় দেশেই পাম অয়েলের বাজার হারিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি-ফেব্রয়ারি সময়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে চীনের বাজারে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় পাঁচ লাখ টন কম পাম অয়েল রফতানি হয়েছে। এ সময় ভারতের বাজারেও দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ লাখ ৮৮ হাজার টন কমেছে । চীন ও ভারতের বাইরে আফ্রিকার দেশগুলো ইন্দোনেশীয় পাম অয়েলের বড় ক্রেতা। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ইন্দোনেশিয়া থেকে এসব দেশে পাম অয়েল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ লাখ ৫০ হাজার টন কমে গেছে। চলতি বছরের শুরুতে চীন ও ভারতের বাজারে পাম অয়েল রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে নভেল করোনাভাইরাস মহামারীকে দায়ী করেছে ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, মহামারী প্রতিরোধে চীন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া—তিন দেশেই লকডাউন থাকায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানিতে। অন্যদিকে দাম তুলনামূলক বেশি থাকায় আফ্রিকার দেশগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এসব কারণে বছরের প্রথম দুই মাসে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি প্রায় ১৯ শতাংশ কমে গেছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর প্রবৃদ্ধির ধারায় ছিল ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি খাত। ২০১৯ সালে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৯১ লাখ টন পাম অয়েল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালে ইন্দোনেশীয় রফতানিকারকরা সব মিলিয়ে ২ কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি করেছিলেন। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি বেড়েছে ৮ লাখ ৩১ হাজার টন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানিতে মন্দা ভাব দেখা গেছে। ওই বছর দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েল রফতানি ২ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬৭ হাজার টনে নেমে এসেছিল। এদিকে ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে রফতানি কমলেও ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের মজুদ বাড়েনি। ফেব্রয়ারি শেষে দেশটিতে পাম অয়েলের সমাপনী মজুদ দাঁড়িয়েছে ৪০ লাখ ৮০ হাজার টনে। গত বছরের একই সময়ে দেশটিতে ৪৫ লাখ ৪০ হাজার টন পাম অয়েল মজুদ ছিল। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের সমাপনী মজুদ কমেছে ৪ লাখ ৬০ হাজার টন।