করোনা কাহিনী : রাষ্ট্রের ভেতরে শক্তিশালী রাষ্ট্র
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৯, ২০২০ , ৬:০২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
শ্যামল দত্ত, সম্পাদক : রাষ্ট্র সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞাটি দিয়েছেন জার্মান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবার। তার সংজ্ঞায় রাষ্ট্র হচ্ছে, আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত কোনো জনগোষ্ঠীর জন্য একটি রাজনৈতিক ক্ষমতা ভোগ করার অধিকার থাকে- সেটাই রাষ্ট্র। তবে কার্ল মার্কস তার কমিউনিস্ট মেনিফেস্টোতে রাষ্ট্র সম্পর্কে দেয়া ধারণায় উল্লেখ করেছেন- সমস্ত বুর্জোয়া সমাজের ক্ষমতা ব্যবহারে যাবতীয় ব্যবস্থাপনার জন্য একটি উদ্যোগ ছাড়া রাষ্ট্র আর কিছুই না।
রাষ্ট্রের সংজ্ঞা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা যা বলুন না কেন, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা সরকার ও রাষ্ট্র সম্পর্কে সাধারণের মধ্যে একটি বোধগম্য সংজ্ঞা নানা ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক বাস্তবতায় সংজ্ঞায়িত হয়ে আছে। কিন্তু আরেকটি নতুন চিন্তা যা উদ্ভব হয়েছে রাষ্ট্রের ভিতরে ভিন্ন এক ধরনের ক্ষমতার বলয়ের সৃষ্টি, যা কখনো কখনো রাষ্ট্রচিন্তার মৌলচেতনাকে চ্যালেঞ্জ করে তৈরি হয়। বিশেষ করে যে সমস্ত দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল, সেখানে নানা প্রক্রিয়ায় এমন রাষ্ট্রের নীতিকে উপেক্ষা করে এ সমস্ত শক্তির সৃষ্টি হয়েছে, যাকে রাষ্ট্রের ভেতরে আরেকটি রাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করা হয়।
পৃথিবীর অনেক দেশে স্বৈরশাসন বহাল থাকার সময়ে রাষ্ট্রের কাঠামোর ভেতরে থাকা এক ধরনের রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটেছে। আবার গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভিতরে রাষ্ট্র যেমন অবাধ ক্ষমতা ভোগের অধিকার রাখে, তেমন ক্ষমতা ভোগকারী অন্য শক্তির উদ্ভব দেখা যায়, যারা যে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার ঊর্ধে্ব। রাষ্ট্রের ভেতরে এ ধরনের ক্ষমতাধর বলয় কখনো নানা আবরণে, রাষ্ট্রের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে, যারা যে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। এই শক্তিগুলো রাষ্ট্রভেদে বিভিন্ন চরিত্রের হয়ে থাকে। কখনো ধর্মের আবরণে, কখনো গোষ্ঠীর আদলে- দুর্বল গণতান্ত্রিক কাঠামোকে তারা নিজেদের প্রেসক্রিপসনে চলতে বাধ্য করে। স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে সিআইএ এবং সোভিয়েত ইউনিয়নে গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি এ ধরনের ক্ষমতা উপভোগ করত।
করোনা ভাইরাসের যুদ্ধে লিপ্ত বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যখন পর্যুদস্ত তখন এই রাষ্ট্রের ভেতরে থাকা নানা শক্তি নানা পদ্ধতিতে সক্রিয়- এমন মতবাদ অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর। বিশ্বজুড়ে একদিকে যেমন উদার গণতান্ত্রিক মতবাদ চ্যালেঞ্জের মুখে, তখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্বৈরতন্ত্রের বিকাশ ও নানা ধর্মীয় ব্যাখ্যার বিস্তৃতি ঘটছে, তা উদার গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার চিন্তাকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য কিংবা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বা হাঙ্গেরীর প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবানের ক্ষমতা বৃদ্ধি- পুরো পশ্চিমা গণতান্ত্রিক ধারণায় নতুন এক ধরনের একনায়ক চিন্তার বিস্তার ঘটছে। মনে হচ্ছে, করোনা মোকাবিলারত টলমলে বিশ্ব ব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে এই শক্তিসমূহ তাদের ক্ষমতাকে সংহত করেছে। রাষ্ট্রের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে এই শক্তিগুলো তাদের নিজস্ব নীতি বহাল রাখার পদক্ষেপ সেই রাষ্ট্রের ভেতরে শক্তিশালী বিভিন্ন শক্তির অস্তিত্বকেই জানান দিচ্ছে। বর্তমান বৈশি^ক প্রেক্ষাপটে নোয়াম চমস্কি এ ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক চিন্তার উদ্ভব সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছেন। রাজনৈতিক কারণে এসব শক্তির সঙ্গে সরকারের মানিয়ে চলার নীতিতে প্রশ্রয়প্রাপ্ত এই শক্তিগুলো রাষ্ট্রের মূলনীতিকে কখনো কখনো চ্যালেঞ্জ তো করছেই বরং রাষ্ট্রের লক্ষ্য অর্জনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় এই প্রশ্নটি সামনে চলে এসেছে বেশ কিছু ঘটনার কারণে। দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে একমাত্র ওষুধ হিসেবে সামাজিক দূরত্বকে গুরুত্ব দিয়ে তা কিভাবে নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাংলাদেশের মতো দরিদ্র ও জনঘনিষ্ঠ দেশে কতখানি সম্ভব তা একটি বিরাট প্রশ্ন। সামাজিক বাস্তবতা, নানা ধর্মীয় অপপ্রচার ও গুজব মোকাবিলা করে এর বাস্তবায়ন এবং লক্ষ্য অর্জনে নানা শক্তি সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে। অনেকেই মনে করে বাংলাদেশের মতো দুর্বল অর্থনীতির দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্রমণ রোধের সুবিধাটি পাওয়া খুবই কঠিন। অন্যদিকে সমাজে ধর্ম বিশ্বাসের প্রবল প্রভাবের কারণে বিধিনিষেধ আরোপ করে ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব। সৌদি আরবের মতো রাজতন্ত্র ও একনায়ক রাষ্ট্র কাঠামোতে অনেক নিয়মনীতি আরোপ করা সম্ভব হলেও ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ অনেক দেশে এটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। এ সমস্ত দেশের সরকারগুলোর বিরুদ্ধে নানা রকমের ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের নানা আপসের অভিযোগ আছে। সম্প্রতি ধর্মীয় নানা বিধিনিষেধ শিথিল করায় পাকিস্তানের চিকিৎসক সমাজ আলেমদের কাছে ইমরান খানের সরকার আত্মসমর্পণ করার অভিযোগ তুলেছে। ভারতে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে উত্তর প্রদেশের একটি মন্দিরে রথযাত্রার অনুষ্ঠান হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে জানাজা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যা ঘটে গেল- তা রাষ্ট্রের ভেতরে আরেক ধরনের রাষ্ট্রশক্তির ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ বলে অনেকেই মনে করেন। এই ধরনের শক্তি এবং তাদের অস্তিত্ব বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থার অংশ হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়। গণজাগরণ মঞ্চের সময় কিংবা হেফাজতের মতিঝিলের শাপলা চত্বরকাণ্ডের পর তাদের সঙ্গে রাষ্ট্রের গোপন ও প্রকাশ্য বোঝাপড়া তাদের শক্তির জানান তো দেয়ই বরং তাদের সঙ্গে সরকারকে যে সমঝোতা করতে হয়, সেই বাস্তবতাই তুলে ধরে। বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন নানা ধরনের শক্তিকে প্রশ্রয় দিয়ে নানা ধর্মভিত্তিক কর্মসূচি নেয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, দুর্বল রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার মধ্যে এ ধরনের শক্তির রাষ্ট্রীয় বলয় তৈরি হয়ে আছে, যা আমাদের জানা বা অজানা। এ কারণেই ধর্মীয় নেতা মাওলানা জুবায়ের আনসারীর জানাজায় এই করোনা সংকটের মধ্যে কতলোক হবে- সে সম্পর্কে রাষ্ট্রের কোনো ধারণা তো নেই- শুধু তাই নয়, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্র কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও ব্যর্থ হয়।
খেলাফত মজলিসের রাজনীতিক প্রভাব বা তার দলের অনুসারী সম্পর্কেও রাষ্ট্রীয় ধারণার অপ্রতুলতায় এরই মধ্যে ফুটে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে যখন জানাজা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, তখন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ছিল নবনিযুক্ত আইজি ড. বেনজির আহমেদের সঙ্গে টেলি কনফারেন্সে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, স্থানীয় ওসি জানিয়েছেন এই জানাজায় ৪০-৪৫ জনের বেশি লোক হবে না। অথচ সরাইল থেকে জানাজা ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তার মানে স্থানীয় প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা বা রাষ্ট্রের কোনো ধারণাই ছিল না জনসমাগম সম্পর্কে। যে কারণে লকডাউনে সরকারের নীতিকে উপেক্ষা করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, এমনকি সুদূর সুনামগঞ্জ থেকে যখন বিনা বাধায় লোকজন সরাইল পর্যন্ত যেতে পেরেছিল। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সেখানে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। সরকারি তদন্ত কমিটি হয়েছে। যথারীতি ওসি, সার্কেল এসপি প্রত্যাহার হয়েছে। এসব তদন্ত কমিটির ফলাফল সম্পর্কেও এ দেশের মানুষের ধারণা আছে। কিন্তু এ ধরনের শক্তি প্রদর্শনের কারণে দু’একজন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও রাষ্ট্রের ভেতরে লুকিয়ে থাকা এসব শক্তির চ্যালেঞ্জ কোনোভাবে খাটো করে দেখার নয়। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলে, আমরা বরং এসব শক্তিকে লালন-পালন করেছি নানা প্রক্রিয়ায়। যে কারণে রাষ্ট্রকে তা মৌল চরিত্রের দিকে নেয়া এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। একটি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় জন্ম নেয়া বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি হারিয়ে যাচ্ছে এই অশুভ শক্তির সঙ্গে আপসকামিতার রাজনীতির মারপ্যাঁচে। যে কারণে গণজাগরণ মঞ্চের সময় আমরা দেখেছি রাষ্ট্রই এই ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তির পক্ষে অবস্থান নিতে। আমরা দেখেছি রাজনৈতিক স্বার্থে রাষ্ট্রের শক্তিধর অবস্থানকেও মাথা নুইতে, দেখছি এসব অপশক্তির কাছে আপোষ করতে। মানুষের মধ্যে এদের প্রভাব সম্বন্ধে রাষ্ট্রের কোনো পর্যবেক্ষণ নেই, কোনো অনুসন্ধানও নেই। সাম্প্রতিক কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিতর্কিত ফলাফলের মাঝখানেও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামের একটি রাজনৈতিক দল কিভাবে এত ভোট পায়, তা নিয়ে কোনো গবেষকের পর্যালোচনাও দেখি না।
সম্প্রতি নিম্নমানের পিপিই ও অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের জেএমআই নামের একটি কোম্পানির কথা উঠে আসলেও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার যেভাবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ নিয়ে যেভাবে বক্তব্য রেখেছে- তাও বিস্ময়কর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্নমানের সামগ্রীর উদাহরণ তুলে কয়েক জেলার সঙ্গে টেলি কনফারেন্সে বক্তব্য রাখলেও ঐদিনই কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ যে ভাষায় কোভিড নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রেখেছেন, তা অনেকটা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করার সামিল বলেই অনেকে মনে করেন। এতে কী বোঝা যায়, রাষ্ট্রের ভেতরেই প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করার মতো শক্তি আছে? বাংলাদেশে এ মুহূর্তে যেহারে চিকিৎসক-নার্স আক্রান্ত হচ্ছেন, তার কারণ অনুসন্ধানের জন্য কোনো তদন্ত কমিটি রয়েছে বলে মনে হয় না। তবে বিশ্বমানের পিপিই ও অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে প্রশ্ন তোলার অন্তত একজন হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসককে শাস্তিমূলক বদলি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালককে এই কারণে প্রথমে বরিশাল ও পরে পাবনা মানসিক হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। নোয়াখালী ২৫০ শর্যার হাসপাতালের একজন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে সরবরাহকৃত পণ্যের মান নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তোলায়। টিআইবির বক্তব্য অনুযায়ী রাষ্ট্রের ভেতরে থাকা এই দুর্নীতির চক্র এতটাই শক্তিশালী যে, কোনো শক্তিকেই তারা পরোয়া করে না।
শেষ করবো রাষ্ট্রের ভেতরে নানা শক্তিধর রাষ্ট্রীয় বলয়ের একটি উদাহরণ তুলে ধরে। ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানে গিয়েছিলাম সেখানকার সাধারণ নির্বাচন কভার করতে। করাচি ও লাহোর হয়ে নির্বাচনের দিন ৬ অক্টোবর আমি, প্রখ্যাত সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার (তখন দৈনিক ইত্তেফাক ও ভারতের ডিক্যান হেরাল্ডে কর্মরত ছিলেন) এবং হাবিবুল্লাহ ভাই (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান বার্তা সম্পাদক ও পাকিস্তানের সংবাদ সংস্থা এপিপিতে কর্মরত) পৌঁছলাম ইসলামাবাদে। ঐ নির্বাচনে পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেত্রী বেনজির ভুট্টো ২৩৭ আসনের মধ্যে ২০৭টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হন। মাত্র দুই বছর আগে বিপুল ভোটে নির্বাচিত নেওয়াজ শরিফ প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভরাডুবি হয় তার নির্বাচনে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ফলাফল ঘোষণার রাতেই বিজয়ী নেত্রী বেনজির ভুট্টো দুজন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে দেখা করেন, যাদের বলা হয় পাকিস্তানের ক্ষমতার মূল কেন্দ্রবিন্দু। যে দুজন ব্যক্তির সঙ্গে বেনজির ভুট্টো দেখা করেন, তারা হলেন তখনকার পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল জাহাঙ্গীর কেরামত এবং তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন ক্যামেরন মনজো। পাকিস্তানের রাজনীতিতে এই শক্তিকে বলা হয়- রাষ্ট্রের মূল নিয়ামক শক্তি। জনগণ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলো- সেটা বড়ো কথা নয়।