আজকের দিন তারিখ ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// করোনা রোগীদের জন্য মাত্র ৪৫টি আইসিইউ বেড!

করোনা রোগীদের জন্য মাত্র ৪৫টি আইসিইউ বেড!


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১, ২০২০ , ৫:৫৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : করোনা আক্রান্তদের জন্য দেশে ৬ হাজার ২০০টি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর আটটি হাসপাতালে রয়েছে ১ হাজার ৫০টি। তবে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) বেড সংখ্যা মাত্র ৪৫টি এবং সবই ঢাকায়। বিশেষজ্ঞরা এ সংখ্যাকে খুবই অপ্রতুল ভাবছেন। তাছাড়া ঢাকার বাইরে এখনও করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল নেই। জেলা শহরের হাসপাতালে যতটা সম্ভব আইসোলেশন বেড রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ঢাকায় করোনাক্রান্তদের জন্য বিশেষায়িত বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ২৬টি, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে ৮টি, সাজিদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ৫টি, মিরপুর রিজেন্ট হাসপাতালে ৬টি ও উত্তরা রিজেন্ট হাসপাতালে ৩টি আইসিইউ বেড রয়েছে। কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য নির্ধারিত এই ৪৫টি আইসিইউ বেডে কেবল ভেন্টিলেটর আছে। তবে সিএমএসডি’র (সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরেজ ডিপো) কাছে রয়েছে ১৬০টি ভেন্টিলেটর। অতি প্রয়োজনে সেগুলো স্থাপন করা যাবে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত যেসব রোগীর অবস্থা গুরুতর আকার ধারণ করে তাদের জীবনরক্ষায় ভেন্টিলেটর খুবই কার্যকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, করোনা আক্রান্ত ৮০ শতাংশ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। প্রতি ছয় জনের মধ্যে একজন গুরুতর অসুস্থ হয়, তাদের শ্বাসকষ্ট মারাত্মক আকার ধারণ করে। তখনই ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়। যদিও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানুর রহমান মনে করেন, করোনা আক্রান্ত প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী ভেন্টিলেটর সহায়তা ছাড়াই সুস্থ হয়ে যায়। তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেন, ‘যাদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে, তাদের অক্সিজেন দেওয়া আবশ্যক। যদি কারও অক্সিজেন ফেইলর হয় তাহলে বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র উপায় ভেন্টিলেটর, এর বাইরে আর কোনও পথ নেই। গত ২৯ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৫০০ ভেন্টিলেটর থাকলেও সব স্থাপিত হয়নি। আর বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৭০০ ভেন্টিলেটর। এছাড়া আমদানি পর্যায়ে থাকা আরও ৩০০ ভেন্টিলেটর আসতে সময় লাগবে। কিন্তু কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কতগুলো ভেন্টিলেটর রাখা হয়েছে সেই তথ্য দেননি মন্ত্রী। সংশ্লিষ্টদের দাবি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পুরো দেশের আইসিইউ অনুযায়ী ৫০০ ভেন্টিলেটরের হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালের সাধারণ আইসিইউতে তো আর করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া যাবে না। তাই কেবল এ ধরনের রোগীদের জন্য বিশেষায়িত আইসিইউ প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান বলছেন, ‘যতদিন প্রয়োজন না পড়বে ততদিন ঢাকাতেই চিকিৎসা করা হবে। ভবিষ্যতে যদি রোগী বেশি হয়ে যায় তখন জেলা শহরের হাসপাতাল নিয়ে ভাববো, নয়তো ঢাকাতেই রোগী রাখা হবে। সেজন্য কেবল রাজধানীর আটটি হাসপাতালকে বিশেষায়িত করেছি। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতালকে পৃথক করে আইসোলেশন বেড রাখতে বলা হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসিইউ সুবিধা নেই। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ থাকলেও সেগুলো সাধারণ রোগীদের উপযোগী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তার প্রশ্ন, এসব জায়গায় করোনা রোগীদের রাখা হলে বাকিদের অবস্থা কী দাঁড়াবে? তাই তাদের পরামর্শ, হাসপাতালে যেসব আইসিইউ বেড থাকবে সেগুলো কেবল কোভিড-১৯ রোগীদের জন্যই রাখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক বেনজির আহমেদ মনে করেন, প্রতিটি রোগীকে কোথায় ও কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া হবে তা নিয়ে পরিকল্পনার দরকার ছিল। তিনি বলেন, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অথবা বেশি সংক্রমিত এলাকায় একইসঙ্গে চিকিৎসা দেওয়ার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়া যেতো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এগুলোকে ‘কন্টেইনজেন্সি প্ল্যান’ বা আপৎকালীন পরিকল্পনা বলা হয়। অধিদফতরের সাবেক এই কর্মকর্তার মন্তব্য, ‘হাসপাতালের বেড, ওষুধ, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা কতটুকু রয়েছে তা দেখতে হবে। চাহিদা ও যোগানের ফারাক কতটুকু তা নির্ধারণ করা দরকার। আর চাহিদা পূরণের জন্য কত সময় লাগবে তা বের করা এ ধরনের মহামারি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে জরুরি। বেনজির আহমেদের আশা, ‘যথাযথ কর্মপরিকল্পনা থাকলে পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন, বাংলাদেশ সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারবে। দেরি হয়ে গেছে ঠিক, তবে এখনও সময় আছে।