কানাডা ডে’তে অ্যালবার্ডার ১০ গির্জায় ভাঙচুর
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৩, ২০২১ , ২:৩০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে ডেস্ক : কানাডার অ্যালবার্ডায় ১০টি গির্জায় ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ। দেশটিতে ‘কানাডা ডে’ উদযাপনের আগ মুহূর্তে এ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে ভাঙচুর হয়। এসব ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে অন্তত দুটি পরিত্যক্ত স্কুলে গণকবর আবিষ্কৃত হওয়ার সম্পর্ক আছে বলে মনে করছে পুলিশ। খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যালগেরি শহরের একাধিক গির্জায় ভাঙচুরের পাশাপাশি কমলা ও লাল রং ছিটানো এবং কোথাও কোথাও দরজা ও দেওয়ালে হাতের রঙিন ছাপ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। অ্যালবার্ডার প্রিমিয়ার জেসন কেনি গির্জায় এ ধরনের হামলায় ‘স্তম্ভিত’ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর আগে চলতি বছরের মে ও জুন মাসে পরিত্যক্ত দুটি আবাসিক স্কুলে প্রায় ১ হাজার অচিহ্নিত কবর আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে উত্তর আমেরিকার এ দেশটিতে বিভিন্ন গির্জায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। সরকারি অর্থায়নে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর পরিচালনায় ঐ স্কুলগুলোতে আদিবাসী শিশুদের রাখা হতো।
১৮৬৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এসব বোর্ডিং স্কুলে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি আদিবাসী শিশুকে তাদের পরিবারগুলো থেকে নিয়ে এসে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল। এসব শিশুদের প্রায়ই তাদের নিজেদের ভাষায় কথা বলতে ও তাদের সংস্কৃতি চর্চা করতে দেওয়া হতো না। তারা ছিল অপুষ্টির শিকার, এমনকি শারীরিক ও যৌন নিগ্রহও সইতে হয়েছে। ২০১৫ সালে কানাডার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন আবাসিক স্কুলগুলোর ঐ চর্চাকে ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যা’ আখ্যা দেয়। যারা এসব বোর্ডিং থেকে শেষ পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পেরেছে তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ক্ষুধা আর একাকিত্ব তাদের তাড়া করে ফিরত; স্কুলে নিয়মিত ভয় দেখানো ও বল প্রয়োগ করা হতো। কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার ঐ স্কুলগুলোর আচরণের জন্য ২০০৮ সালে ক্ষমা চেয়েছে। তবে বেশির ভাগ স্কুল পরিচালনার ভার যাদের দায়িত্বে ছিল, সেই রোমান ক্যাথলিক গির্জার পক্ষ থেকে এখনো দুঃখ প্রকাশ করা হয়নি। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পোপ ফ্রান্সিসকে কানাডায় এসে উনিশ ও বিশ শতকে আবাসিক স্কুলগুলোতে আদিবাসী শিশুদের ওপর করা নিপীড়নের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অচিহ্নিত এসব কবর আবিষ্কারের পর অনেকে সরকারের প্রতি ১ জুলাই ‘কানাডা ডে’ উদযাপন বাতিলেরও আহ্বান জানিয়েছিলেন। অ্যালবার্ডার প্রিমিয়ার কেনি জানান, বৃহস্পতিবার ক্যালগেরির যেসব গির্জায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে, তার মধ্যেই একটি ইভাঞ্জেলিকাল গির্জাও আছে। যেসব দেশে প্রায়শই গির্জায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়, সেসব দেশ থেকে আসা শরণার্থীরাই ক্যালগেরির এই ইভাঞ্জেলিকাল গির্জাটির অনুসারী।