আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস/////, অর্থ ও বাণিজ্য কারসাজির পরিণতি হবে মীর গ্রুপের মত: বাণিজ্যমন্ত্রী

কারসাজির পরিণতি হবে মীর গ্রুপের মত: বাণিজ্যমন্ত্রী


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৯, ২০১৬ , ২:২৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////,অর্থ ও বাণিজ্য


PID-Commকাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: চিনি ও ছোলার দাম বৃদ্ধির ‘কারণ’ তুলে ধরে বাজারে কারসাজির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক পর্যালোচনা সভায় মন্ত্রী এ বিষয়ে সতর্ক করে দেন।

মুক্তবাজার অর্থনীতির এই যুগে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ‘দাম বেঁধে দেওয়ার’ বদলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ওপরও গুরুত্ব দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা রোজা থাকি, তারাবি নামাজ পড়ি, ইফতার করি, সেহরি খাই। এটা হল সংযমের মাস। সবাই যেন আমরা সংযমী হই।”

ব্যবসায়ীরাও সংযমের মধ্য দিয়েই ব্যবসা করবেন- এমন আশা প্রকাশ করে তোফায়েল বলেন, “অতিরিক্ত মুনাফার চেষ্টা করলে মীর গ্রুপের মত অবস্থা হবে”

মিল থেকে ৪৬ টাকা কেজি দরে কেনা চিনি পাইকারিতে ৫৮ টাকায় বিক্রি করায় চট্টগ্রাম নগরীর খাতুনঞ্জের হাজী মীর আহমদ ট্রেডার্সকে বুধবার ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর না করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমরা বাজেট দিয়েছি, ভ্যাট নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। আমরা সেটা কার্যকর করি নাই। তারপর আমরা একটা সহনীয় বাজেট দিয়েছি। বাজেট দেওয়ার পর বাজারে অন্য রকম প্রতিক্রিয়া হয়… সেটা এবার হয় নাই।”

সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হন- এটা যেমন চাই না, তেমনি ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হোক- সেটাও চাই না। এটা যাতে স্বাভাবিক থাকে, সেইদিকেই খেয়াল রাখতে হবে।”

পরিশোধনকারীরা ৪৮টাকায় চিনি বাজারে ছাড়ে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু ব্যবসায়ী ‘কৃত্রিম সঙ্কট’ সৃষ্টি করতে চায়।

“চিনি ৪৮ টাকায় পাইকারি বাজারে যায়, আমরা এটা জেনে গেলাম। এখন কেউ এটার দাম যদি বাড়াতে চেষ্টা করে, এক্ষেত্রে যারা কারসাজি করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”

চিনি ও ছোলা ছাড়া অন্য সব পণ্যের দাম ‘স্বাভাবিক আছে’ দাবি করে তিনি বলেন, “এগুলো স্বাভাবিকই থাকবে।”

চিনি ও ছোলার দাম বৃদ্ধির পেছনে ‘কয়েকটি যুক্তিসঙ্গত’ কারণ রয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, দেশীয় চিনি শিল্পকে রক্ষায় সরকার ট্যারিফ বাড়িয়েছিল। এরপরও চিনির কেজি ৬০ টাকার নিচে থাকার কথা।

“হয়তো আকস্মিকভাবে কেউ কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা ধরা পড়েছে। চিনি যারা পরিশোধন করে তারা ৪৮ টাকায় বিক্রি করে। পাইকাররা যদি ২-৩ টাকা ব্যবসা করে, খুচরা বিক্রেতারা যদি ৫ টাকা লাভ করে, তারপরও এটা ৫৭-৫৮ টাকার বেশি হওয়া উচিত না।”

সরকার খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম বেঁধে দিবে কি না জানতে চাইলে তোফায়েল বলেন, “মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এটা করা যায় না। এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজও না। এটা করলে কাজেও আসে না।”

তবে তিনি ভোক্তা অধিদপ্তরকে ‘বাজার মনিটরিং’ জোরদার করার আহ্বান জানান।

ছোলার বিষয়ে তিনি বলেন, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম ছিল  ৫২ টাকা কেজি। এখন তা বেড়ে ৭৩ টাকা হয়েছে; ৬০ ভাগ দাম বেড়েছে।

“এটা রোজর সময় মানুষ খায়। আমরাও খাই। ভারতে ১০ লাখ টন ঘাটতি আছে। অস্ট্রেলিয়ায় ১০ লাখ টন উদ্বৃত্ত থাকলেও ভারত পুরোটা নিয়ে নিচ্ছে। তারপরও আমার মনে হয়, প্রথম যে ঊর্ধ্বগতি ছিল- এখন তা স্বাভাবিক হয়ে আসছে।”

গণমাধ্যমকেও এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “যারা নিজেরা পণ্য কেনে না, বাজারেও যায় না, খবরও রাখে না, এমন অনেকে টকশোতে গিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়।”

বর্তমান সরকারের সময়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় ‘এক শ্রেণীর মানুষ’ বাজারে গিয়ে ‘দরদাম না করেই’ সওদা করে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “বাজারে এটারও প্রভাব আছে।”