জয়ে ফিরল অস্ট্রেলিয়া
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৮, ২০২১ , ২:৩৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস
দিনের শেষে প্রতিবেদক : ১২০ বলে করতে হবে ১০৫ রান। পৃথিবীর যে কোনো উইকেটে কাজটা সহজ মনে হলেও মিরপুরের হিসাব ভিন্ন। এটাই চ্যালেঞ্জিং স্কোর। সেই লক্ষ্যেও আবার সাকিব আল হাসানের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ড্যান ক্রিস্টিয়ান পাঁচ ছক্কায় তুলে নেন ৩০ রান। ওই ওভারটাই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দেয়। সিরিজে বাংলাদেশের একাধিপত্য থামল চতুর্থ ম্যাচে এসে। টানা তিন জয়ে সিরিজ মুঠোয় ভরার পর মুদ্রার উলটো পিঠ দেখলেন মাহমুদউল্লাহরা। কষ্টের জয়ে সম্ভাব্য হোয়াইটওয়াশ এড়ালো অস্ট্রেলিয়া। শনিবার মিরপুরে আরেকটি লো স্কোরিং ম্যাচে বাংলাদেশকে তিন উইকেটে হারিয়েছে সফরকারীরা। আগেই সিরিজ জয়ের আনন্দের রেণু কালও উড়েছে বাংলাদেশের আকাশে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০তে এগিয়ে যেতে নিবেদনে একটুও কমতি রাখেনি স্বাগতিকরা। মাত্র ১০৪ রানে পুঁজি নিয়েও দারুণ লড়াই করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ড্যান ক্রিস্টিয়ানের খুনে ব্যাটিংয়ে ব্যবধান হলো ৩-১। তার ১৫ বলে ৩৯ রানের ইনিংস হয়ে গেল সফরকারীদের জয়ের ভিত। তার আগে ফিল্ডিংয়ে আফিফ হোসেনের একটি শটে যেভাবে মাঠের বাইরে যাওয়া বল লাফিয়ে বাতাসে ভেসে মাঠে ফেরালেন, তা ছিল অবিশ্বাস্য। বাংলাদেশে উইকেট ও খেলার ধরনের বিপক্ষে ভালো করার পরিকল্পনাতেই সফল হলো অস্ট্রেলিয়া। সিরিজে প্রথম খেলতে নামা লেগ-স্পিনার মিচেল সোয়েপসন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। চার ওভারে ১২ রানে তিন উইকেট নিয়ে তিনিই ম্যাচসেরা। আগামীকাল একই ভেন্যুতে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি ২০।
মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলামের কাটার কিংবা স্পিনারদের ঘূর্ণি জাল ভেদ করার লক্ষ্যে চেষ্টার কমতি করছে না অস্ট্রেলিয়া। আগের ম্যাচে তিনটি ও কাল দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে তারা। সোয়েপসন সুযোগ পেয়েই দারুণ কিছু করে দেখিয়েছেন। টি ২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ বরাবরই শেষ বেঞ্চের ছাত্র। সেই বাংলাদেশ পরপর তিন ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেবে, সিরিজ শুরুর আগে এ কথা বললে নির্ঘাত সেটিকে রসিকতা ধরে নিতেন আপনি। সেই জয়ও কী অবিশ্বাস্য সব পারফরম্যান্সে। অস্ট্রেলিয়াকে হতচকিত করে। অথচ, কালকের হারটাই এখন অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। উইকেট যথারীতি ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন ছিল। ১০৫ রানের লক্ষ্যটা নাগালে বলে অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে যায় আগেই। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর দারুণ পরিল্পনায় তারা ক্রিস্টিয়ানকে ওয়ানডাউনে নামিয়ে সফল হয়েছে। তবে সহজ পথটাও মন্থর উইকেটে হঠাৎ কঠিন হয়ে যায় বাংলাদেশের দারুণ বোলিংয়ে। ৬৫ রানে তারা হারিয়ে ফেলে ছয় উইকেট। মোস্তাফিজ এ ম্যাচেও চার ওভারে মাত্র নয় রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। তবে সাকিব এদিন ক্যারিয়ারের অন্যতম বাজে বোলিংয়ে দলকে ডুবিয়েছেন। কোনো উইকেট না নিয়ে তিনি দেন ৫০ রান। তার চার ওভারেই ইনিংসের প্রায় অর্ধেক রান চলে আসে। শেষ দিকে অ্যাশটন অ্যাগার আউট হলেও তার ২৭ বলে ২৭ রানই ছয় বল বাকি থাকতে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেয় দলকে। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম তিন ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের রান ছিল ২২। একপর্যায়ে এক উইকেটে রান ৪৮। সেখান থেকে বাংলাদেশের পথ হারানোর শুরু। একের পর এক উইকেট হারিয়ে এক সময় একশ হওয়া নিয়েই টানাটানি। শেষ পর্যন্ত মেহেদী হাসানের সৌজন্যে একশ পার করতে পারে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েতে দারুণ একটি সিরিজের পর সৌম্য সরকার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কালও ব্যর্থ হন। এক ছক্কায় করেন মাত্র আট রান। পাওয়ার প্লেতে একই ধারা। বাংলাদেশ নিতে পারে ৩০। অন্য ম্যাচের মতো মন্থর শুরুর পরও বাংলাদেশের ১৩০ বা তার বেশি স্কোরের খুবই সম্ভাবনা দেখাচ্ছিল। তবে সোয়েপসন ও হ্যাজলউডদের নিয়ন্ত্রণ বোলিংয়ের সামনে কখনই সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ২৮ রান করা নাঈম শেখ খেলেন ৩৬ বল। সাকিব এদিন ২৬ বলে করেছেন মাত্র ১৫ রান। একমাত্র আফিফই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলছিলেন। তবে ঝড় তোলার আভাস দিয়েও পারেননি তিনি। তার ২০ রানের ইনিংসটি স্বাগতিক দলের প্রাণ ফেরালেও তার বিদায়ে সম্ভাবনা থেমে যায়।