আজকের দিন তারিখ ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ ডাকাতের আস্তানায় পুলিশ-বিজিবির ১৩ সেট পোশাক, মিলল ১৮ আগ্নেয়াস্ত্র

ডাকাতের আস্তানায় পুলিশ-বিজিবির ১৩ সেট পোশাক, মিলল ১৮ আগ্নেয়াস্ত্র


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৮, ২০২০ , ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


কক্সবাজার (টেকনাফ) প্রতিনিধি : অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যতই কঠোর হচ্ছে ততই কৌশলী হয়ে নিজেদের অপকর্ম চালাচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের পাহাড়কেন্দ্রিক অপরাধীচক্র। ডাকাতি অপহরণ কর্ম আরও সহজ করতে ডাকাতদল ব্যবহার করছে পুলিশবিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক। মজুত করছে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র। বুধবার ( মে) টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গীখালীর পাহাড়ে পুলিশের সঙ্গেবন্দুকযুদ্ধেতিন ডাকাত নিহতের ঘটনায় তাদের আস্তানা থেকে মিলেছে এমনই আলামত। পুলিশ ডাকাত দলের আস্তানা থেকে পুলিশের অফিসার কনস্টেবল পর্যায়ের ১০ সেট এবং বিজিবির নানা র্য্যাংকধারীদের ব্যবহার্য্য তিন সেট পোশাক উদ্ধার করেছে। সাথে পেয়েছে ৫৬ হাজার ইয়াবা, ১৮টি দেশিবিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, রাইফেল পিস্তলের গুলিসহ ২২৪ পিস তাজা কার্তুজ। টেকনাফ থানা পুলিশের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এসব তথ্য জানিয়েছেন। প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে হ্নীলার রঙ্গীখালীর গাজিপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ে ডাকাতইয়াবাকারবারি জড়ো হয়েছে জানতে পেরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। কিছুক্ষণ পর গোলাগুলি থামলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়দের মতে, নিহতরা হলেন টেকনাফের হ্নীলার রঙ্গীখালীর জুম্মাপাড়ার মৃত আবদুল মজিদ ওরফে ভোলাইয়া বৈদ্যের দুছেলে সৈয়দ আলম (৩৬) নুরুল আলম (৩৭) এবং একই এলাকার ছব্বির আহমদের ছেলে আবদুল মোনাফ ওরফে মনাইয়া (২২) ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই মশিউর রহমান, এএসআই সনজিব দত্ত, এএসআই মিঠুন কুমার ভৌমিক আহত হন। সূত্র জানান, টেকনাফে রঙ্গীখালী খামার থেকে নিরীহ কৃষি শ্রমিক আক্তার উল্লাহ (২৪) শাহ মোহাম্মদ শাহেদ (২৫), মোহাম্মদ ইদ্রিস (২৭) নামে তিনজনকে ২৯ এপ্রিল রাতে তুলে নিয়ে যায় সশস্ত্র ডাকাত দল। এরপরইমুক্তিপণদাবি করে রোহিঙ্গা ডাকাতরা। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় শুক্রবার ভোরে তাকে হত্যার পর লাশ টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উনছিপ্রাং পুটিবনিয়া নামক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে রাখা হয়েছে বলে পরিবারের কাছে খবরও পৌঁছে দেয় পাহাড়ে অবস্থানকারী ডাকাতদল। এরপর থেকেই বাকি দুজনকে উদ্ধার ডাকাতদের ধরতে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে বুধবার ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গীখালীর পাহাড়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিন ডাকাত নিহত হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে, বন্দুকযুদ্ধে তিনজন মারা গেলেও অপহৃত বাকি দুজন কৃষি শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করেনি পুলিশ। ডাকাতের আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক পাওয়াকে উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, এত মৃত্যুর পরও টেকনাফের পাহাড়ে অবস্থানকারী ডাকাতচক্র খুবইডেস্পারেট এটার প্রমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকে তাদের অপকর্ম করার পরিকল্পনা। পাহাড়ঘেরা দুর্গম এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকে কোনো বাড়িতে গেলে সহজে অপকর্ম করা যাবে। এদের অপকর্ম রোধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। সাথে স্থানীয়দেরও সচেতন থাকা দরকার, পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকে কেউ বাড়ির দরজা খুলতে বললে নিশ্চিত না হয়ে যেন দরজা না খুলেন। অপহৃত অপর দুজনকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, টেকনাফ সীমান্তে প্রায় ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা পাহাড় অধ্যুুষিত দুর্গম। সেখানে চিরুনী অভিযান ছাড়া অপরাধী নির্মূল কষ্টসাধ্য। সেই পথেই আমরা এগুচ্ছি। করোনাযুদ্ধ শেষ হলেই টেকনাফের ডাকাত নির্মূল অভিযান তরান্বিত করা হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্র মতে, চলতি বছরের পাঁচ মাসের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ২২ জন সক্রিয় ডাকাত বলে উল্লেখ করেন সূত্রটি।