আজকের দিন তারিখ ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় ঝুলন্ত তার অপসারণ হবে কি?

ঝুলন্ত তার অপসারণ হবে কি?


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১ , ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


ঝুলন্ত তারের জঞ্জালমুক্ত একটি ঢাকানগরী ঢাকাবাসীকে উপহার দেয়ার লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশন কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছিল। শহরের সৌন্দর্য ফেরাতে কঠোর অবস্থান দেখেছি দুই সিটি করপোরেশনের। মাঝপথে এসে দুই করপোরেশনের কার্যক্রমে ভাটা পড়ে গেছে। এর ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে মাটির নিচ দিয়ে তারের লাইন নিয়ে যাওয়ার প্রকল্প সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে নগরবাসীর দুর্ভোগ যেন শেষ হবে না। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তাকালেই দেখা যায় চারদিক ভরে গেছে ইন্টারনেট ও ডিশ লাইনের তারের গোছায়। ইন্টারনেট, ডিশ, টেলিফোন, বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনগুলো জড়িয়ে আছে একসঙ্গে। সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ক্যাবল টিভি অপারেটররা দিনের পর দিন মাথার ওপর দিয়ে তার টানছে। চানখাঁরপুল, লালবাগ, নবাবপুর, তাঁতীবাজার, ইংলিশ রোড, চকবাজার, আরমানিটোলা, আজিমপুর, বংশালসহ বেশকিছু এলাকায় তারের জঞ্জালের অবস্থা ভয়াবহ। মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সর্বত্রই জট পাকানো তার ঝুলছে। বিদ্যুতের পিলার ব্যবহার করে এসব তার ছড়িয়ে পড়েছে অলি-গলিতে। তারের জঞ্জাল সরাতে সরকার দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছে। গত এক দশক ধরে এজন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ও উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়। যদিও বেশকিছু এলাকায় এরই মধ্যে বিদ্যুতের তার মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তবে ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় এসব সেবা সংস্থার তারের জঞ্জাল এখনো মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তারের জঞ্জাল সরাতে উচ্চ আদালত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্দেশ দিয়েছেন। তার কোনো অগ্রগতি আমরা দেখিনি। এটা দুঃখজনক। জানা গেছে, ঢাকার বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তারের জঞ্জাল সরাতে চীনের অর্থায়নে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ডিপিডিসি। ২০২৫ সালের মধ্যে রাজধানীর সব এলাকার বিদ্যুতের তার মাটির নিচে চলে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। অগ্রগতির অবস্থা দেখে সংশয় বাড়ছে। তারের জঞ্জাল থেকে ঢাকাকে মুক্ত করতে ২০০৯ সালে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শাহবাগ থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে অন্য সব সেবার তার সরানোর কাজ শুরু হয়েছিল তখনই। কিন্তু সে সময় খুব সামান্য পরিমাণ তার অপসারণ করা হয়েছিল। নতুন করে তার অপসারণের এই উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন হয় তা দেখার বিষয়। ক্যাবল অপারেটররা নানাভাবে এই অভিযান বন্ধে তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা দাবি করছে সময় দেয়া হলে তারগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। তার বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে বলে তারা দাবি করছে। তাদের এই দাবি কতটা প্রাসঙ্গিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় বিবেচনা করে দেখবেন। ঝুলন্ত তার ও বিদ্যুতের লাইন ভ‚গর্ভে নিয়ে দেশের প্রথম তারবিহীন শহরে নাম লিখিয়েছে সিলেট। সিলেট ঢাকার জন্য উদাহরণ হতে পারে। নগরের সৌন্দর্য বাড়াতে এক্ষেত্রে সব মহলের সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।