ডেঙ্গুর মৌসুম ও প্রাদুর্ভাব: এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ১২, ২০২১ , ১২:৪১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই রাজধানীতে বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় (৯ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ১০ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে রাজধানীতে আরো ৪৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৭৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ৬৭৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৪৯৪ জন। করোনা সংকটে ডেঙ্গু বিষয়টি অনেকটা ঢিলেঢালা ছিল। ঢিলেঢালা পরিস্থিতি হলে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবে অনেক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এখনই মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। দুই বছর দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে ডেঙ্গু রোগে তখন ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গু জ্বরের কোনো প্রতিষেধক বের করতে পারেনি সরকার। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্য মতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। এ মশা যত বেশি হবে ডেঙ্গুর হারও তত বাড়বে। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। ২০১৯ সালে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলাকালীন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। এরপর দুই সিটি মশক নিয়ন্ত্রণে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সেগুলো ছিল কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটির তেমন কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়নি। চলমান প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনকে আগাম সতর্ক করেছিলেন হাইকোর্ট। কারণ এই ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরে যদি কোনোভাবে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, তাহলে কিন্তু মানুষের শেষ জায়গাটিও থাকবে না। কিন্তু দুই সিটি কর্তৃপক্ষের দাবি, এডিস মশার প্রজনন বন্ধ করার লক্ষ্যে মোবাইল কোর্টসহ নিয়মিত তৎপরতা চলছে। আমরা দুই মেয়রের বক্তব্যের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কাজের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। কাজেই দেরি না করে মেয়রদ্বয় এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন। প্রথমত, সবখানে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস মশা নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবেÑ এ প্রত্যাশা নগরবাসীর।