ধর্ষণ বিরোধী মানববন্ধন-সমাবেশ-বিক্ষোভে উত্তাল জাতীয় প্রেসক্লাব
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৯, ২০২০ , ২:১০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে ডেস্ক : সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ-নির্যাতনসহ এর মত জঘন্যতম সব কার্যকালাপের সাথে জরিত দোষীদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, সমাবেশ, বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বর। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) সকাল থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জনসমাগম ঘটতে থাকে। সকাল ১০টার দিকে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে প্রেসক্লাব চত্বর। বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় হাজারখানেক মানুষ সকাল থেকে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ করছেন। সম্প্রতি দেশে ধর্ষণ, যৌন হয়রানির প্রবণতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে সামাজিক প্রতিরোধের দাবিতে নাগরিক ঐক্য, ফিউচার অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কনফেডারেশন অব লেবার (বিসিএল), জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল, বাংলাদেশ নেজামি ইসলাম পার্টি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, ঢাকাস্থ নোয়াখালী বেগমগঞ্জ ঐক্য পরিষদ, খেলাফত মজলিস, অলিন্দের সদস্য এই বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন।
আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার হাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল– ‘আমার বোন আজ ধর্ষিতা মানুষ তুমি চুপ কেন?’, ‘ধর্ষকদের বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন কর’, ‘ধর্ষণকারীর ফাঁসি চাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর এই বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘চলো যাই যুদ্ধে ধর্ষণের বিরুদ্ধে’, ধর্ষণকারীদের প্রকাশ্য ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে’, ‘স্টপ রেপ নাউ’, ‘ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি প্রকাশ্যে ফাঁসি’, ‘ঘরে বাহিরে নারীরা থাকুক নিরাপদে’, ‘স্টপ রেপ’ এবং ‘হোক প্রতিবাদ হোক প্রতিরোধ সর্বত্র/ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ’।
সিলেটের এমসি কলেজ চত্বরে নববধূর সম্ভ্রমহানি এবং বেগমগঞ্জে গৃহবধূর নারকীয় বিভৎসতাসহ দেশব্যাপী অব্যাহত নারী ও শিশুর ওপর ঘৃণ্য সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। সারাদেশে ধর্ষণ ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধ করেছে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন অলিন্দ। বিসিএলের সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, ‘আমেরিকা-ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে নারীরা নির্যাতন কম হয়’। ধর্ষণের ঘটনায় মন্ত্রীরা এই ধরনের কথা বলেন। তাহলে আমরা কোন দেশে বাস করছি? তিন বছরের কন্যাশিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এরকম একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এখন মানুষ বেশি এসব ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারছে। দেশে শতকরা ৮০টি ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায় না। বাকি ২০টি ধর্ষণের মধ্যে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায় ১০টি। তার মধ্যে শতকরা ৫টি ক্ষেত্রে ধর্ষকের শাস্তি হয়।
এ সময় তারা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণচেষ্টা ও নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বিধবা নারীকে ধর্ষণ, ভোলার চরফ্যাশনে গৃহবধূকে ধর্ষণ, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, কুষ্টিয়ার মিরপুরে মাদরাসার শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, রাজশাহীর গির্জায় ধর্ষণ, কিশোরগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণ, বরিশালের বাকেরগঞ্জে শিশুধর্ষণ, আশুলিয়ায় দুই কিশোরীকে ধর্ষণ, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে চার শিশুকে যৌন হয়রানি, খাগড়াছড়ি ও সাভারে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নারীর প্রতি সসিংসতা বন্ধে এবং এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান। একই সময়ে মানববন্ধন, সমাবেশ, বিক্ষোভ যারা করেছে, তাদের মধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূ ধর্ষণের প্রতিবাদ, ধর্ষণকারী গ্রেপ্তার হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধনবাদ ও দোষীকে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকার নোয়াখালী বেগমগঞ্জ ঐক্য পরিষদ।
সারাদেশে অব্যাহত নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন ও নানাবিধ অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রশাসনের যথাযথ দায়িত্ব পালন এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে মানব কল্যাণমূলক সংগঠন ‘ব্লাজা’। ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী। সারাদেশে নারীর ওপর সকল নিপীড়ন বন্ধসহ অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সোনাইমুড়ী যুব কল্যাণ সমিতি। ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে অভিযান ক্লাব। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জসহ সারাদেশে অব্যাহত নারী ও শিশু ধর্ষণ, নিপীড়ন ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘নিরাপদ খাদ্য চাই’। প্রেসক্লাবের মতো দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী ও শিশুদের ধর্ষণ ও নির্যাতনের মানববন্ধন, বিক্ষোভ, র্যালি, সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।