আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// ধেয়ে আসছে আম্পান : আমলে নিচ্ছেন না উপকূলবাসী

ধেয়ে আসছে আম্পান : আমলে নিচ্ছেন না উপকূলবাসী


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ১৯, ২০২০ , ১০:২২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। তালতলী উপকূলের সাগর ও পায়রা নদীসংলগ্ন অঞ্চলের ৫০ হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড় আম্পানকে আমলেই নিচ্ছেন না। তাদের মধ্যে কোনো আতঙ্কই নেই। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মঙ্গলবার মাইকিং ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করলেও তারা তা শুনছেন না। তাদের দ্রুত সরিয়ে না নিলে সাইক্লোন সিডরের পুনরাবৃত্তি ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় আকাশ মেঘাছন্ন, প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ও হালকা বাতাস বইছে। মঙ্গলবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার সাগর ও পায়রা নদীসংলগ্ন পঁচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী, মৌপাড়া, গাবতলী, চরপাড়া, তালতলী, খোট্টারচর, তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, নলবুনিয়া, ফকিরহাট, নিদ্রাসকিনা ও আমখোলাসহ উপকূলের অধিকাংশ এলাকায় মানুষ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরে অবস্থান করছে। এসব এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। কিন্তু প্রশাসনের কথা আমলে নিচ্ছেন না তারা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরে অবস্থান করছেন। তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের হাত থেকে রক্ষায় তালতলী উপজেলার উপকূলীয় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরের জনসাধারণকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে নিরাপদ স্থানে আনার চেষ্টা করছি। তাতেও যদি তারা না আসে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন দিয়ে বল প্রয়োগ করে হলেও তাদের নিরাপদ স্থানে আনা হবে। তাদের নিরাপদ স্থানে আনতে প্রতিটি ইউনিয়নে ওয়ার্ডভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। তারা তাদের নিরাপদ স্থানে আনতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, উপকূলের মানুষগুলো সচেতন না। তারা বন্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তার পরও একটা মানুষকেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেব না। গাবতলী আবাসনের আবদুস ছত্তার হাওলাদার বলেন, কী হরমু? কইতে পারি না। দেখইয়্যা লই কী অয়। বইন্যায় বেশি চ্যাতাচ্যাতি হরলে হেই সোমায় যামু। তালতলী ফকিরহাট বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. ছালাম হাওলাদার বলেন, উপকূলের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও তারা তা মানছে না। তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানকে তারা আমলেই নিচ্ছেন না। তাদের দ্রুত সরিয়ে না নিলে ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন সিডরের পুনরাবৃত্তি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত তাদের সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই। সহকারী পরিচালক আমতলী ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি কর্মকর্তা কেএম মাহতাবুল বারী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দূরে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কর্মসূচি অফিসসূত্রে জানা গেছে, সুপার সাইক্লোন আম্পান পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দূরে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। উপকূলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীতে ৭ নম্বর বিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর ও নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছাস প্লাবিত হতে পারে। সাগর ও নদীসংলগ্ন মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাসহ জেলেদের নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখতে উপজেলায় ৪৮টি সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৯শ স্বেচ্ছাসেবক। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্র আম্পান মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি নিয়েছে। উপকূলের মানুষকে সচেতন ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।