ন্যাটোর সদস্য হতে আর ইচ্ছুক নন জেলেনস্কি
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ৯, ২০২২ , ৪:৫৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে ইউক্রেন আর ইচ্ছুক নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য পদ–সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, তিনি অনেক আগেই এ ব্যাপারে শান্ত হয়েছেন, যখন তারা বুঝতে পেরেছেন যে ইউক্রেনকে গ্রহণ করতে ন্যাটো প্রস্তুত নয়। তাই তিনি এখন আর ন্যাটোর সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়টিতে জোর দিচ্ছেন না।
দোভাষীর মাধ্যমে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, আমি এমন একটা দেশের প্রেসিডেন্ট থাকতে চাই না, যারা হাঁটু গেড়ে ভিক্ষা চায়। জেলেনস্কি আরও বলেন, তিনি বুঝেছেন যে, ন্যাটো রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করবে না। তারা এই বিতর্কিত বিষয়ের মধ্যে ঢুকতে ভয় পাচ্ছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সামরিক অবকাঠামোর বাইরে রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে আবাসিক ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল। ধ্বংস হয়ে গেছে সামরিক-বেসামরিক বহু অবকাঠামো। আর এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়ার ওপর বাড়ছে চাপ।
যদিও যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়া যে দাবিগুলো করেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো- ইউক্রেন কখনোই সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হতে পারবে না। এছাড়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে হবে বলেও জানিয়েছে রাশিয়া।
এর জবাবে জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হবে না। দ্বিতীয় দাবি নিয়েও তিনি নরম হয়েছেন। সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন।
তার দাবি, ইউক্রেনকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে। জেলেনস্কি বলেছেন, ওই দু’টি অঞ্চলকে শুধুমাত্র রাশিয়াই স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে আমরা অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওই অঞ্চলে মানুষ কীভাবে বসবাস করবে। তারা ইউক্রেনের অংশ থাকতে চায়। ইউক্রেনের মানুষ তাদের ছেড়ে দিতে রাজি কি না সেটিও দেখতে হবে। তাই প্রশ্নটা শুধু তাদের স্বীকৃতি দেয়া নিয়ে নয়, বিষয়টি বেশ জটিল। জেলেনস্কি আরও বলেছেন, আমরা হুমকি মেনে নিতে প্রস্তুত নই। যেটা দরকার, তা হলো, প্রেসিডেন্ট পুতিন আমাদের সঙ্গে কথা বলুন।