ফরিদপুরে ফাতেমা ধানের বাম্পার ফলন
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১৮, ২০২১ , ১২:৩৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) সংবাদদাতা : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় শুরু হয়েছে শস্যভাণ্ডার খ্যাত ফাতেমা ধানের চাষ। উপজেলার হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে ব্যতিক্রম এই ধানের চাষ করেছেন। রিয়াজুল জানালেন, ইউটিউবের কয়েকটি ভিডিও দেখেই ফাতেমা ধান সম্পর্কে জানেন ও চাষে আগ্রহী হন। জানা গেছে, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কথামতো ছেলে লেবুয়াত শেখ নিজেদের জমিতে ধান চাষ করতে গিয়ে তিনটি শীষ খুঁজে পান। পরে সেই শীষের ধান বুনে পান দুই কেজি বীজ। সেই বীজ এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে লেবুয়াত শেখ ৩৫ মণ ধান ঘরে তোলেন। যেখানে অন্যান্য ধানের ফলন বিঘা প্রতি ১৮ মণের বেশি পাওয়া সম্ভব ছিল না। মায়ের নামানুসারে লেবুয়াত এই ধানের নাম রাখেন ‘ফাতেমা ধান’। এ নামেই দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিচিতি পায় ধানটি।
এ ধানের গাছ, ফলন, পাতা, শীষ সবকিছু অন্য যে কোনো জাতের ধানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতি গোছায় একটি চারা রোপণ করা হয়, যা বেড়ে ৮-১২টি হয়। প্রতিটি গাছ ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬-৪০ সেন্টিমিটার। প্রতি ছড়ায় দানার সংখ্যা ১ হাজার থেকে ১২শ’। ওজন ৩০-৩৫ গ্রাম। ধানগাছের পাতা লম্বা ৮৮ সেন্টিমিটার, ফ্লাগলিপ (ছড়ার সঙ্গের পাতা) ৪৪ সেন্টিমিটার। পাতা দেড় ইঞ্চি চওড়া হয়। এই জাতের গাছের কাণ্ড ও পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং বেশ শক্ত। তাই এটি ঝড়-বৃষ্টিতে সহজে হেলে পড়ে না। ফাতেমা ধানের একরপ্রতি ফলন প্রায় ১৩০ মণ।
আলফাডাঙ্গার রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে এই ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। ৮/১০ দিন পর থেকেই কাটা শুরু হবে।
রিয়াজুল ইসলাম দিনের শেষে প্রতিনিধিকে জানান, ‘ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে জানতে পারি। প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করার পর বাগেরহাটের কৃষক লেবুয়াতের মায়ের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করি। ৭৫ শতাংশ জমিতে সবমিলিয়ে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অবশ্য বাড়িতে না থাকায় ধানের সঠিক যত্ন নিতে পারিনি। তারপরও আশা করছি ৯৫-১০০ মণ ধান হবে।’ এই ধান উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলেও তিনি জানান।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রিপন প্রসাদ সাহা জানান, বাগেরহাটের কৃষক কর্তৃক উদ্ভাবিত ফাতেমা জাতের ধানের রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য। এ ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। এটি দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রফতানি করা যেতে পারে। রিয়াজুল ইসলামের পরীক্ষামূলক চাষে বাম্পার ফলন হবে জানিয়ে সাধুবাদ জানান রিপন প্রসাদ। এ ছাড়া ইউটিউবে কৃষি নিয়ে দেশি ভিডিওর প্রচার ও প্রসারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা উপকৃত হবেন বলেও মনে করেন তিনি