আজকের দিন তারিখ ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় ফিলিস্তিনে আগ্রাসন: এই বর্বরতার শেষ কোথায়?

ফিলিস্তিনে আগ্রাসন: এই বর্বরতার শেষ কোথায়?


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ১৮, ২০২১ , ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিন জ্বলছে। নিষ্পাপ শিশু, সাধারণ নারী ও নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর মিছিল দেখে বিশ্ববিবেক কিছুটা নড়েচড়ে ওঠে। এরপর আবার হারিয়ে যায় ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবি স্বাধীনতার প্রশ্নটি। গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১৯৭ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানিতে প্রশ্নটি আবারো সামনে এসেছে। ধ্বংস হয়েছে বিপুলসংখ্যক ঘরবাড়ি। বহু মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষ ইসরায়েলের এমন ন্যক্কারজনক হামলার নিন্দা অব্যাহত রেখেছে। আমরাও নিন্দা জানাচ্ছি। ইসরায়েলের অমানবিক তৎপরতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ এক ইশতেহারে ১৯৬৭ সালে দখলকৃত ভূখণ্ড থেকে সরে আসতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল জাতিসংঘের ইশতেহারকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে তাদের বসতি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ২০০২ সালে ইসরায়েল বর্ণবাদী দেয়াল নামে পরিচিত ৭০০ কিলোমিটার দেয়াল নির্মাণ করে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের একটা অংশ নতুন করে দখল করে নিয়েছে। ১৯৪৮ থেকে ২০২১ সাল। এই ৭৩ বছরে ফিলিস্তিনিরা কোণঠাসা হয়েছে, নিজ ভূমিভিটা থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং প্রাণ হারিয়েছে অন্যদিকে ইসরায়েলের শৌর্যবীর্য বেড়েছে। থেমে নেই ইসরায়েল হামলা। এবার বেসামরিক স্থাপনাকেই লক্ষ্যবস্তু করেনি, আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যমের একটি ভবনও গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে ২০০৮ ও ২০১২ সালের ব্যাপক হামলায় গাজার বিপুল অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বহু নিরপরাধ ফিলিস্তিনি মৃত্যুবরণ করে। ইসরায়েলিদের দখলকৃত অংশে তথা স্বভূমিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের মানবেতর জীবনযাপন, আন্তর্জাতিক নির্দেশ উপেক্ষা করে ইসরায়েলের আগ্রাসন, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা বেদনাদায়ক। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি এবং তাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। রাজনৈতিকভাবে সচেতন এবং মানবতাবাদী অসংখ্য দেশ ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সমর্থন জোগাচ্ছে। কিন্তু আমেরিকার অন্ধভাবে ইসরায়েলকে সমর্থনের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা বারবার বিঘ্নিত হচ্ছে। ইসরায়েল-আমেরিকার সঙ্গে আরব বিশ্বের বিরোধ ও দ্বন্দ্বের চিরস্থায়ী সমাধান এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই শান্তির পথে পা না বাড়িয়ে উল্টো জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির আগুন জ্বেলে দিয়েছেন। সম্প্রতি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরো উসকে দিয়েছেন। দুনিয়ার শান্তিকামী মানুষের মতো আমরাও আশা করি, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসান হওয়া প্রয়োজন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘকাল ধরেই ফিলিস্তিনিদের মুক্তিসংগ্রামের পাশে ছিল, আছে, থাকবে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের এ ঘৃণ্য হামলা বন্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা নেবে- এটাই প্রত্যাশিত।