বরিশালে ইমাম লাঞ্ছনাকারী সেই চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৩
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৫, ২০২০ , ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
বরিশাল (মেহেন্দিগঞ্জ) প্রতিনিধি : মেহেন্দিগঞ্জে মাদ্রাসাশিক্ষককে জুতার মালা পড়িয়ে নির্যাতনের মূল হোতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বরিশাল জেলা ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে পার্শ্ববর্তী মুলাদী উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে। একই সাথে চেয়ারম্যানের সহযোগী সাবেক মেম্বার সাত্তার সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে মামলার ৯ নম্বর আসামী বজলু আকনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। জানা গেছে, ঘটনার পর অভিযুক্তরা মুলাদী উপজেলার একটি বাসায় আত্মপোন করে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি টিম সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অভিযান চালিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে গ্রেফতার করেন। এর আগে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে একটি মাদ্রাসার অফিস সহকারীকে মারধর ও জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতি অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিন। মামলায় দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী, স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার শহীদ দেওয়ান, সাবেক মেম্বার ইউনুস বয়াতি ওরফে কামরুজ্জামান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুস ছত্তার সিকদারসহ ১০ জনকে নামধারী ও আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালিশের নামে বুধবার বিকেলে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে স্থানীয় মাদ্রাসার অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিনকে মারধর ও জুতার মালা পড়িয়ে হেনস্থা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ ভিডিওতে দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুস ছত্তার সিকদার এবং স্থানীয় চৌকিদারকে ওই কেরানিকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করার দৃশ্য রয়েছে। আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাহিদা সুলতানা স্বামীর বরাত দিয়ে জানান, ২০১৯ সালে উপবৃত্তির তালিকা পাঠানোর সময় এক ছাত্রী মাদ্রাসায় না আসায় সেখানে নিজের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে দেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ দিন নম্বরটি ব্যবহার না করায় এটি বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানি। এরই মধ্যে ছাত্রীর এক বছরের উপ বৃত্তির ১৮শ’ টাকা ওই মোবাইল নম্বরে জমা হয়। কিছুদিন আগে মোবাইল নম্বরটি সচল করে উপবৃত্তির টাকা দেখতে পান তিনি। ওই টাকা ছাত্রীর পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই গেল ৩০ মে তাকে মারধর করে সিম কার্ডটি নিয়ে যায় ছাত্রীর খালু সাবেক ইউপি মেম্বার সত্তার সিকদার। পরে এ বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষা অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দেন। এরপর ঘটনাটি ওই পর্যন্ত গড়ায়। তিনি বলেন, ‘টাকা আত্মসাতের ইচ্ছে থাকলে গোপনে টাকা উঠিয়ে ফেলতে পারতো, কিন্তু মাওলানা সাহেব তা করেননি। তিনি ওই ছাত্রীর স্বজনদের অবগত করার আগেই মেম্বার সব ঘুরিয়ে দিলেন।’