বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে চীনকে শিল্পমন্ত্রীর আহ্বান
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১৪, ২০১৬ , ৬:১৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
কাগজ অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধাদক্ষ জনশক্তি আমদানি করতে চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘চীনে শ্রমিকের মজুরি ব্যাপকহারে বাড়ার কারণে বাংলাদেশ থেকে শ্রমশক্তি আমদানির সুযোগ রয়েছে।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশে উন্নতমানের শিল্পপণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে চীনের উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং মানবসম্পদ প্রশিক্ষণের জন্য যৌথ বিনিয়োগের প্রস্তাব করেন।
চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর চেং হাউ এর সঙ্গে বৈঠককালে শিল্পমন্ত্রী এ আহ্বান জানিয়েছেন বলে শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। কুনমিং ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে মঙ্গলবার (১৪ জুন) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দু’দেশের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সাল নাগাদ শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জনে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের অবদান শতকরা ৩৫ ভাগ এবং শিল্প শ্রমশক্তির পরিমাণ শতকরা ২৫ ভাগে উন্নীত করা হবে। ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে।’
তিনি বাংলাদেশে চিনি, কাগজ ও সার কারখানার আধুনিকায়ণে সরাসরি কিংবা যৌথ বিনিয়োগে চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। চীন বাংলাদেশের শিল্প কারখানায় ইটিপি স্থাপনে কারিগরি সহায়তা দিতে পারে।’
এর পাশাপাশি তিনি জ্বালানি সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদন, বিএসটিআই’র আধুণিকায়ন, রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, আধুনিক পদ্ধতিতে মৌ-চাষ এবং পরিবেশবান্ধব শিপ-রিসাইক্লিং শিল্পখাতে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা কামনা করেন। তিনি গভর্নরকে বাংলাদেশ সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে গভর্নর চেং হাউ বলেন, ‘কুনমিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারের লক্ষ্যে দু’দেশের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়ের দাবি।’
বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত কুনমিংয়ের জনগণকে আকর্ষণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কুনমিং প্রদেশের শিল্প উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পসহ উদীয়মান শিল্প খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।’ দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য প্রসারের মাধ্যমে বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির অংশীদার হতে চীন সব ধরনের সহায়তা দেবে বলে তিনি জানান।
এদিকে গতকাল সোমবার (১৩ জুন) বিকেলে শিল্পমন্ত্রী আন্তর্জাতিক উৎপাদন দক্ষতা বিষয়ক সহায়তা জোরদার সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন, সফটওয়্যার, ওষুধ, পাটজাত পণ্য, সিমেন্ট ও সার শিল্প খাতে বিশ্বমানের কারখানা স্থাপনে সরাসরি কিংবা যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে চীনা উদ্যোক্তাদের পরামর্শন দেন।
কুনমিং ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে আয়োজিত এ সভায় চীন সরকারের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান নিং জি, ইউনান প্রদেশের গভর্নর চেং হাউ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মন্ত্রী ও শিল্প উদ্যোক্তারা বৈঠকে অংশ নেন।