আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্পোর্টস বিনা টিকিটে গ্যালারিতে ঢোকা ছেলেটার নামেই স্টেডিয়ামের প্যাভিলিয়ন

বিনা টিকিটে গ্যালারিতে ঢোকা ছেলেটার নামেই স্টেডিয়ামের প্যাভিলিয়ন


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: নভেম্বর ৪, ২০২৩ , ৩:৫৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস


দিনের শেষে ডেস্ক :  স্টেডিয়ামে ঢোকার পথে বেশ কড়াকড়ি। নিরাপত্তা প্রহরী সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘আজ কোনো অনুশীলন নেই। মাঠে প্রবেশ করাও যাবে না।’ বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ছিল দিল্লির অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। দিল্লির বায়ুদূষণের কারণে অনুশীলন বাতিল করে বাংলাদেশ জাতীয় দল। তবুও স্টেডিয়ামে ঢুঁ মারার চেষ্টা। কিন্তু বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচকে সামনে রেখে দিল্লির অ্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন সজাগ। মাঠের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত নয় এমন কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না।

তবে এই স্টেডিয়াম কেবল শুধু মাঠের সবুজ ঘাস আর গ্যালারিতে সীমাবদ্ধ নয়। ১১৪.৫ একর জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা স্টেডিয়ামের এলাকাতে রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বার, জিম, ব্যাডমিন্টন লাউঞ্জ, কর্পোরেট বক্সসহ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সব সুযোগ-সুবিধা আলাদা আলাদা করে সাজানো গোছানো রয়েছে। বর্তমান সময়ে এই স্টেডিয়ামে পা রাখলে ভারতের ক্রিকেটের ধ্রুবতারা বিরাট কোহলির নামটাই সবার আগে উচ্চারিত হবে। মাঠের বাইরের বেশ কয়েকটি গ্রাফিতিতে যেভাবে কোহলিকে তুলে আনা হয়েছে তাতে তাই মনে হবে।

দিল্লি ভারতীয় ক্রিকেটকে দুহাত ধরে ক্রিকেটার দিয়ে এসেছে। মনসুর আলী খান পতৌদি, মদন লাল, মনোজ প্রভাকর, রমন লাম্বা, বীরেন্দর শেবাগ, গৌতম গম্ভীর, ইশান্ত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, রিশাভ পান্ত দিল্লি ক্রিকেটের উজ্জ্বলতম ক্রিকেটার। তাদেরই একজন বিরাট কোহলি। কিন্তু পারফরম্যান্স, রেকর্ড, ঐশ্বর্য, খ্যাতিতে সমকাল তো বটেই দিল্লির ক্রিকেট ইতিহাসের সেরার খেতাবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। তাইতো খেলোয়াড়ী জীবনে নিজের নামের প্যাভিলিয়ন দেখতে পেরেছেন কিং কোহলি।

শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে কোহলির কাঁধে উঠে যায় ক্রিকেট কিট, হাতে ক্রিকেট ব্যাট। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০০ সালে তার শৈশবের কোচ রাজকুমার শর্মা তাকে ভারত ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচের টিকিট দেন। ওই টেস্ট চলাকালীন জাভেগাল শ্রীনাথের অটোগ্রাফ পাওয়ার জন্য সারাদিন চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন কোহলি। এরপর কোহলি কত চড়াই-উতরাই পার করে, অজুত-নিযুত ঘামবিন্দু ঝরিয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন। যেখানে তার নামে স্টেডিয়ামে একটি প্যাভিলিয়ন করা হয়েছে। এক ভিডিও বার্তায় কোহলি সেদিন বলেছিলেন,‘আমি আমার ভাইকে বলেছিলাম, দেখ কত পথ পেরিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছি যে আমার নামে একটি প্যাভিলিয়ন নামকরণ করা হয়েছে। বিরাট সম্মানের।’

শুধু বিরাট কোহলি নয়, ফিরোজ শাহ মনে রেখেছে মহিন্দর অমরনাথকেও। পাঞ্জাবের ক্রিকেটার হলেও দিল্লি হয়ে খেলার কারণে তাকে প্রাপ্য সম্মান দিয়েছে স্টেডিয়ামের গ্যালারির নামকরণ করে। স্বাধীন ভারতের প্রথম অধিনায়ক লাল অমরনাথের ছেলে মহিন্দর অমরনাথ ভারতের হয়ে ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন।

 

জীবন তো এমনই। সৎ থেকে নিজের কাজ করে গেলে, পরিশ্রম ও মেধার সঠিক ব্যবহার করলে, হাল না ছেড়ে ফলের জন্য শতভাগ নিবেদন দেখালে একটা সময় নিশ্চিত সাফল্য আসবেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৬ হাজার ২০৯ রান করা কোহলির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। শুধু দিল্লির এই স্টেডিয়ামে কেন, ক্রিকেটের ২২ গজে কোহলি যা করেছেন তা সমকাল ছাড়িয়ে মহাকালেও অক্ষয় কালিতে লেখা থাকবে।