আজকের দিন তারিখ ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ বেওয়ারিশ কুকুরে অতিষ্ঠ ঠাকুরগাঁওবাসী

বেওয়ারিশ কুকুরে অতিষ্ঠ ঠাকুরগাঁওবাসী


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১, ২০১৬ , ২:২৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


Thakurgaonঅনলাইন ডেস্ক: কুকুরের অত্যাচারে গরু-ছাগল তো দূরের কথা সাধারণ মানুষও রক্ষা পাচ্ছে না। মনে হচ্ছে মানুষ ও গরু-ছাগলের চেয়ে কুকুরের দাম বেশি। এমন অবস্থা এখন ঠাকুরগাঁওবাসীর।

বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে ঠাকুরগাঁও পৌরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ঠাকুরগাঁও শহরের প্রতিটি রাস্তা এখন বেওয়ারিশ কুকুরের দখলে রয়েছে। রাস্তা দিয়ে শিশু কিশোরসহ সাধারণ জনগণও সঠিকভাবে যাতায়াত করতে পারছেন না।

ঠাকুরগাঁও শহরের হাজিপাড়া, আশ্রমপাড়া, বাজার পাড়া, সার্কিট হাউজ মোড়, ইসলামবাগ, টিকাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় দল বেধে ১০-১৫ টি কুকুরকে এক সঙ্গে ঘুরতে দেখা যায়। স্বাস্থ্যবান, হিংস্র হওয়ার কারণে পথচারীরা এ সকল কুকুর দেখলে ভয়ে সামনে যেতে চায় না। কুকুরগুলো মানুষ দেখলেই পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তির শেষ নেই।

বিশেষ করে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা বেওয়ারিশ কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কোনো শিশু যদি খাবার নিয়ে যায়, তাহলে কুকুরগুলো তার পিছু নিয়ে তাড়া করছে এবং এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে।

এছাড়া রাতে সাইকেল বা মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় ফেরার সময় বেওয়ারিশ কুকুর মানুষের পথ রোধ করে ধরে। গরু, ছাগলকেও ছাড় দেয় না এ সকল কুকুর। কিন্তু পৌর প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না।

গত কয়েক দিনে এ সকল বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে প্রায় ১৫-২০টি গরু ও ছাগল মারা গেছে। কুকুরগুলো সাধারণত গরু বা ছাগলকে টার্গেট করে কামড় দেয়। কামড়ে যদি বেশি ক্ষত হয় তাহলে কামড় দেয়ার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে গরু বা ছাগলটি মারা যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী আফসানা প্রিয়া বলে, আমি বাসা থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় গার্লস স্কুল মোড়ে তিন চারটি কুকুর আমাকে ধাওয়া করে। আমি দৌঁড়ে পালাতে গেলে একটা কুকুর এসে আমার ডান পায়ে কামড় দেয়। আমি এখন হাসপাতালে এসেছি ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য।

ঠাকুরগাঁও মুন্সিরহাট এলাকার বাসিন্দা মনসুর আলী বলেন, কিছু দিন আগে ৬-৭টি কুকুর আমার বাসার পালিত ছাগলটিকে কামড় দেয়। ভ্যাকসিন পর্যন্ত দেয়ার সময় পায়নি। তার আগেই ছাগলটি মারা যায়। শখের বসে বাসায় ছাগল পালন করতাম। কিন্তু কুকুরের উপদ্রবে এখন ছাগল বা গরু পালন সম্ভব না।

ঠাকুরগাঁও হাজিপাড়ার বাসিন্দা কুরবান আলী জানান, রাতে দোকান বন্ধ করে আমার বাসায় যেতে ১১.৩০ টা বাজে। মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিদিন সার্কিট হাউজ মোড়ে ১০-১৫টি কুকুর আমার গাড়ির সামনে এসে রাস্তা আটকে দেয়। কোনো কোনো দিন পেছনে পেছনে দৌড় দেয়। ভয়ে এখন অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু কিছুদিন থেকে সেই রাস্তাও ৬-৭টি কুকুর দেখছি।

ঠাকুরগাঁও সিটি ফার্মেসি এ্যানিমেল হেলথ ওষুধ দোকানের মালিক সানাউল্লাহ মানিক জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬-৭টি গরু বা ছাগলের কুকুর কামড়ানোর ভ্যাকসিন বিক্রয় হয়। কুকুরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার কারণে গৃহপালিত পশুগুলো কুকুরের কামড়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার দায়িত্বে থাকা প্যানেল মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করতে পারবো না। কারণ আইনগতভাবে নিষেধ রয়েছে। তবে কেউ মেরে রেখে গেলে আমরা তা পরিষ্কার করে দিতে পারবো।