ভুলভাবে বক্তব্য উপস্থাপন, বিএনপির বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জার্মান রাষ্ট্রদূত
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২০, ২০২২ , ৪:৩৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি
দিনের শেষে ডেস্ক : বিএনপির ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাকে উদ্ধৃত করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি খুশি নন। কারণ ওই আলাপে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বিএনপি নেতাদের কাছে কোনো উদ্বেগ জানাননি। কিন্তু তাকে উদ্ধৃত করে সেই উদ্বেগের কথা বলা হয়েছে যা সত্য নয়।
বুধবার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব আয়োজিত ‘ডিক্যাব টকে’ এ কথা বলেন তিনি। সংগঠনের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাসের সভাপতিত্বে ডিক্যাব টকে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন।
জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার আরও বলেন, গত ১৭ মার্চ বৈঠকের ভুলভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করে জার্মানি। নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা না হয়, সেটাই চায় জার্মানি।
অপর প্রশ্নের জবাবে আখিম ট্রোস্টার জানান, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাবে জার্মানি। জার্মান রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না জার্মানি। বাংলাদেশের কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আগ্রহ নেই। বিএনপির সঙ্গে আমার যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে বিএনপি নেতারা কেন নির্বাচনে অংশ নেয়নি বা নিতে চায় না সেই বিষয়টি আমাকে ব্যাখ্যা করেছে, এর বেশি কিছু না।
তিনি আরও বলেন, আমাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে, আমি বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এটা সত্য নয়। এটা যদি আমার কথা হয়ে থাকে, আমি নিজেই আমার কথা বলতে পারি। নির্বাচন সামনে রেখে গতবারের মত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কোনো পর্যবেক্ষণ জোট এখনো তৈরি হয়নি বলে জানান আখিম ট্রোস্টার।
গত ১৭ মার্চ গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আখিম ট্রোস্টারের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন-এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত কি বলেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সম্বন্ধে বিশ্বব্যাপী সবাই অবগত আছে। এখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। এসব ব্যাপারে তারা উদ্বিগ্ন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনের বিষয় বাদ দিয়ে তো কোনো আলোচনা হতে পারে না। কারণ, আগামী নির্বাচন প্রশ্নে সবার চোখ তো বাংলাদেশের দিকে। স্বাভাবিকভাবে তারা জানতে চেয়েছেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে, আগামী নির্বাচনে কী হতে যাচ্ছে? এ ব্যাপারে তাদেরও পর্যবেক্ষণ আছে। নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত কিছু জানতে চেয়েছেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ তো আমাদের দলের নিজস্ব ব্যাপার।