ভেজালবিরোধী অভিযানে ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা জরিমানা
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৮, ২০১৬ , ২:৩০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: চলতি অর্থবছরের (২০১৫-১৬) ১১ মাসে ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিক্রেতাকে ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভেজাল পণ্য উপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, বিক্রেতার বিরুদ্ধে বিএসটিআই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই গৃহিত বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় যাতে অসাধু ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যপণ্য ও পানীয় প্রস্তুত এবং বিপণন হতে বিরত থাকে সে লক্ষ্যে বিএসটিআই কর্মসূচি পালন করছে। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগরীতে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রতিদিন অতিরিক্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ভেজালবিরোধী অভিযান চলছে। এই ভেজালবিরোধী অভিযান সারা বছর অব্যাহত থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ভেজাল পণ্য উৎপাদন করে তাদের নামের তালিকাও প্রকাশ করা হবে। যাতে জনগণ বুঝতে পারে কোন প্রতিষ্ঠান ভেজাল পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তখন জনগণ তাদের পণ্য বর্জন করবে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি পাবে।
আমির হোসেন আমু বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিএসটিআই-এর নিরবচ্ছিন্ন অভিযানের ফলে দেশের ফলমূলে ফরমালিনের ব্যবহার অনেকাংশে কমে এসেছে। চলতি মৌসুমে ফলমূল পরীক্ষার জন্য বিএসটিআই ল্যাবলেটরিতে খেজুর, আম, লিচু, মাল্টা, আপেল ও আঙ্গুরের ৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করেছে এবং ৩৬টি নমুনা স্পটে পরীক্ষা করে কোনো ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তবে সব ফলে যে ফরমালিনের উপস্থিতি থাকবে না তা নয়। হয়ত নমুনাগুলোতে পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রমজানে যাতে নির্ভেজাল খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইফতার ও সেহরীতে অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত ১৮৩টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে বেশকিছু নমুনার ল্যাবরেটরি টেস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের নমুনা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত আছে ও থাকবে।
মন্ত্রী বলনে, গত ১১ মাসে ভেজালবিরোধী অভিযানে মোট ৭৯৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এতে মোট ১ হাজার ১৬৪টি মামলা দায়ের করাসহ সেগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এছাড়া ৬৫৮টি সার্ভিল্যান্স টিম পরিচালনা করা হয়েছে এবং তারা ৬৬৫টি মামলা দায়ের করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার একশ টাকা জরিমানা করেছে।
আমু বলেন, সারা দেশে বিএসটিআই’র আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে এ ধরনের ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আকস্মিকভাবে পরিচালিত অভিযানগুলোতে বিশেষ করে রোজাদারগণ সচরাচর যে সকল খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে থাকেন সেগুলো হলো- মুড়ি, খেজুর, কলা, আম, সফট ড্রিংক্স, পাউডার, ফ্রুট জুস, ফ্রুট ড্রিংকস, ভোজ্য তেল, সরিষার তেল, ঘি, নুডুলস, লাচ্ছা সেমাই, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট ইত্যাদির ওপর বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক মো. ইকরামুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।