আজকের দিন তারিখ ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় মাঠ সংরক্ষণে সরকারের ভূমিকাই মুখ্য

মাঠ সংরক্ষণে সরকারের ভূমিকাই মুখ্য


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৯, ২০২০ , ১:৪৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


ক্রীড়াঙ্গনে ঢাকায় যতটা সুযোগ রয়েছে সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। ঢাকায় ক্রিকেট, ফুটবল কিংবা হকির আলাদা মাঠ থাকলেও, ভিন্ন রূপ চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের খেলার মাঠগুলো বছরের বেশিরভাগ সময় ব্যবহৃত হচ্ছে মেলা কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানে। মাঠের অভাবে খেলার দলগুলোর অনুশীলন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি উঠতি খেলোয়াড়রা সমস্যায় পড়ছেন। কখনো কখনো দেখা যায় দিনক্ষণ ঘোষণা করেও শেষ করা যায় না কোনো কোনো ইভেন্টগুলো। এমন অবস্থা ক্রীড়াঙ্গনের জন্য সুখকর নয়। চট্টগ্রামে দুটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামের পাশাপাশি বেশ কিছু ছোট-বড় মাঠ রয়েছে। এর মধ্যে আউটার স্টেডিয়াম, পলোগ্রাউন্ড মাঠ, লালদীঘি মাঠ, আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠ ও প্যারেড ময়দান অন্যতম। এসব মাঠ বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বর্তমানে তারুণ্যের বড় একটি অংশ জড়িত হয়ে গেছে ক্রিকেটের সঙ্গে। মাঠের অভাবে তারা অনুশীলনের সুযোগ পায় না। জানা গেছে, গত কয়েক দশকে চট্টগ্রামে তৈরি হয়নি কোনো মাঠ। বরং আগে যে মাঠগুলো ছিল সেগুলো হয়ে গেছে সংকুচিত। আউটার স্টেডিয়ামের মাঠ ক্রিকেটার তৈরির নার্সারি বলে খ্যাত। সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, আকরাম খান, ফজলে রাব্বী রুবেল, নাফিস ইকবাল, আফতাব, নাজিম উদ্দিন, তামিম ইকবালরা উঠে এসেছেন এ আউটার স্টেডিয়াম থেকে। জাতীয় ফুটবলার আশীষ ভদ্রও খেলেছেন এ মাঠে। সেই মাঠটি এখন খেলার অনুপযোগী। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের দুটি টাওয়ার স্থাপন করতে গিয়ে মাঠের একটি অংশ চলে গেছে। পূর্বপাশে মার্কেট করতে গিয়ে চলে গেছে আরো একটি অংশ। বাকি যেটুকু রয়েছে কিছু অংশে নির্মিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সুইমিং কমপ্লেক্স। অবশিষ্ট যেটুকু আছে খেলাধুলা সম্ভব নয়। অন্যান্য মাঠের অবস্থা একই রকম। এমতাবস্থায় চট্টগ্রামে মাঠের সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কৈশোরে একমাত্র বিনোদনের স্থান হলো খেলার মাঠ। আর এই মাঠগুলো দিন দিন প্রভাবশালীদের দখলে যাচ্ছে। বর্তমান সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির প্রধান কারণের মধ্যে খেলার মাঠের স্বল্পতা অন্যতম। এর জন্য সমাজব্যবস্থা ও মফস্বল শহরগুলোর অপরিণত পরিকল্পনাই মুখ্য ভ‚মিকা পালন করে থাকে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ-সবল দেখতে চাইলে খেলাধুলার বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। এর জন্য খেলার মাঠ সংরক্ষণ ও নতুন মাঠ তৈরির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে মাঠ রক্ষার আইন মেনে চলতে হবে এবং এই আইন লঙ্ঘনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মাঠ নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শুধু নয়, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপও জরুরি।