মালাবিতে বিচারকদের সিদ্ধান্তে পুনঃভোট : বিরোধী দলীয় নেতা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৮, ২০২০ , ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে প্রতিবেদক : ঐতিহাসিক ভোটে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট পিটার মুথারিকাকে পরাজিত করে মালাবির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা লাজারাস ছাকবিরা। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোটে লাজারাস পেয়েছেন শতকরা ৫৮.৫৭ ভাগ ভোট। শনিবার দিনশেষে দেশটির নির্বাচন কমিশন এ ঘোষণা দিয়েছে। দেশটিতে এই নির্বাচন ঐতিহাসিক এ জন্য যে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। তাতে বিজয়ী হন পিটার মুথারিকা। তবে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ওই বছরই মে মাসে সেই নির্বাচন বাতিল করে দেয় দেশটির সাংবিধানিক আদালত। তবে মঙ্গলবারের নির্বাচন হওয়া নিয়ে তিক্ত বিভক্তি ছিল দেশে। ২০১৭ সালে আফ্রিকার দেশ হিসেবে কেনিয়াতে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাতিল হয়ে যায়।
তারপর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে মালাবিতে একই ঘটনা ঘটে। জালিয়াতির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও তাদের সাংবিধানিক আদালত সেই নির্বাচনকে বাতিল করে দেয়। এর মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক আদালতের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ফুটে উঠেছে। তারা যে সরকারের আজ্ঞাবহ নয় তার প্রমাণ দিয়েছে। এ জন্যই এ নির্বাচনকে ঐতিহ্যবাহী বলা হচ্ছে।
শনিবার সরকারি ফল ঘোষণার পর লাজারাস ছাকবিরা বলেছেন, তার এই বিজয় হলো গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের বিজয়। এতে আনন্দে আমার বুক ভরে গেছে। ওদিকে ফল ঘোষণার পর পরই তার সমর্থকরা মালাবির রাজধানী লিলোংবিতে নেমে পড়েন। তারা উল্লাস করতে থাকেন। গাড়ির হর্ন বাজাতে থাকেন একতালে। আকাশে আতশবাজি পোড়ান।
মালাবি থেকে বিবিসির সাংবাদিক উইল রস বলছেন, দেশটির রাজনীতির ইতিহাসে এ এক বিরাট ঘটনা। এর মধ্য দিয়ে এই প্রমাণই উঠে এসেছে যে, এই দেশটির আদালত বা নির্বাচন কমিশন প্রেসিডেন্ট বা সরকারের ক্ষমতা দ্বারা প্রভাবিত নয়। গত বছরের নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পিটার মুথারিকা। কিন্তু ভোটের ট্যালিকে মুছে সেখানে অন্য সংখ্যা বসিয়ে দিতে কারেকশন ফ্লুইড ব্যবহার করা হয়েছে এমন তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর সাংবিধানিক আদালত ওই নির্বাচন বাতিল করে দেন। এ অবস্থায় সাহায্য চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান পিটার মুথারিকা। বিচারকদের ওপর ভীষণ চাপ পড়ে। কিন্তু নীতির কাছে তারা ছিলেন অটুট। একটুও টলেন নি। কোনো ক্ষমতা তাদেরকে প্রভাবিত করতে পারে নি। তারা তাদের শপথ অনুযায়ী ন্যায়বিচার করেছেন। পিটার মুথারিকাকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আদালত প্রত্যাখ্যান করে। ফলে নতুন নির্বাচন হয় মঙ্গলবার। তাতে লাজারাসকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেন দেশবাসী।