রেমডেসিভির ও প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার না করার সুপারিশ
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৩১, ২০২০ , ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
দিনের শেষে ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় বহুল আলোচিত রেমডেসিভিরসহ অন্যান্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের চূড়ান্ত ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে প্লাজমা থেরাপিও ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটি। সর্বশেষ করোনা বিষয়ক গাইডলাইনে এ পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত নতুন স্বাস্থ্যবিধিতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে প্লাজমা থেরাপি না দেয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ স্বাস্থ্যবিধিটি এমন এক সময় প্রকাশিত হল যখন বাংলাদেশের কয়েকটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য সরকারের অনুমোদন নিয়ে রেমডেসিভির উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়া, অন্যান্য কয়েকটি দেশের মত বাংলাদেশে করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধের কোনটিরই উচ্চমানের ইতিবাচক ফল পাওয়ার প্রমাণ মেলেনি বরং এসকল ওষুধের জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। সংস্থাটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য কোনোধরনের অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন তারা এখন পর্যন্ত দেয় নাই।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৭৩ কোটি ২০ লাখ আমেরিকান ডলার বা ৬২২২ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। আইএমএফ এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে জরুরি সহায়তার অংশ হিসেবে শূন্য সুদে দেয়া শর্তহীন এই ঋণ সহায়তা জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার এবং অর্থনীতিকে সঠিক পথে রাখতে যে প্রণোদনা কর্মসূচি বাংলাদেশ নিয়েছে তা বাস্তবায়নে ব্যয় করা যাবে।
রেমডেসিভির এবং অন্যান্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ব্যাপারে ডব্লিউএইচও বলেছে, কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যমান গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। করোনার চিকিৎসায় এসব ওষুধের কোনোটিরই উচ্চমানের ইতিবাচক ফল পাওয়ার প্রমাণ মেলেনি। এমনকি এসব ওষুধের জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
এর আগে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটি কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ারোধী ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এবং ক্লোরোকুইন ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেয়।
সংস্থাটি বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ মানুষের শরীরে মৃদু এবং ৪০ শতাংশের মাঝারি উপসর্গ দিয়ে রোগটির শুরু হয়।
এছাড়া ১৫ শতাংশের গুরুতর আকার ধারণ করে; যাদের অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। অন্য ৫ শতাংশের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়; যারা আগে থেকে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনিসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে করোনার প্রকোপের দেড় শ দিনের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শতাধিক ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব ভ্যাকসিনের মধ্যে অন্তত ৬টি প্রথম ধাপের ট্রায়াল সফল হওয়ায় দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।
তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নভেল করোনা ভাইরাসের চূড়ান্ত ভ্যাকসিন পেতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে। এমনকি কোভিড-১৯ এর কোনো ভ্যাকসিন কখনও নাও পাওয়া যেতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।