লকডাউনের অজুহাতে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৩০, ২০২১ , ১:১৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে ডেস্ক : লকডাউনের অজুহাতে রাজধানীর সবজির বাজারে ‘আগুন’ লেগেছে। একইসঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজারও অস্থির। করোনাকালে এই লাগামহীন ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজারে খেটে খাওয়া মানুষের পকেট পুড়ছে। তবে কিছুটা অপরিবর্তিত আছে মুদি পণ্যের বাজার। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধের কারণে পণ্য সরবরাহ কম, বেড়েছে পরিবহন খরচও। আর ক্রেতারা বলছেন, এগুলো আসলে কিছুই না, সবটাই অজুহাত। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মোহাম্মদপুর টাইন হল মার্কেট, কৃষি মার্কেট, ধানমন্ডি, মিরপুর-১ নম্বর বাজার ও ভ্রাম্যমাণ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। কমেনি মাছের দামও। তবে কিছুটা অপরিবর্তিত আছে মুদি পণ্যের বাজার।
বিক্রেতাদের দাবি, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে নিত্যপণ্যের সবজি আসে রাজধানীতে। চলমান লকডাউনের কারণে পণ্য সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দামও চড়া। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের সবজি ব্যবসায়ী আরাফাত বলেন, ‘বাইরে থেকে মাল (সবজি) আসছে কম। ওই দিকে দামও বেশি। ট্রাক ভাড়াও বেড়েছে। তাই সবজির দাম বেশি।’ এমন অজুহাত অন্যান্য সবজি ব্যবসায়ীদেরও। বাদশা নামে একজন বলেন, ‘লকডাউনে আগের মত মাল পাই না। কম আহে। মাল কম থাকলে দামও বাড়ে। সাপ্লাই বেশি থাকলে দামও কম থাকতো।’
তবে ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বাড়ার বিষয়টি অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কারণে-অকারণে, বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের বাড়তি মূল্য হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার ঘোষিত লকডাউনকে অজুহাত বানিয়ে পকেট কাটছেন ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে আসা মামুন সোহাগ বলেন, ‘কোন সবজিটার দাম কম? প্রতিদিনই এদের জিনিসপত্রের দাম বাড়ে।’ দাম বৃদ্ধির বিষয়ে অনেকে আবার সরকারকেও দোষারোপ করছেন। তুহিন নামের এক ক্রেতার অভিযোগ, বাজারগুলোতে মূল্য তালিকার বোর্ড নিয়মিত লেখা হয় না। শুধু রমজান মাস আসলে বাজারের কথা মাথায় আসে সরকারের। তাছাড়া সারাবছর বাজার মনিটরিং হয় না বললেই চলে।’
সবজির দর
গত শুক্রবার বাজারভেদে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছিল কাঁচা মরিচের দাম। দাম উঠেছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।
গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে এক কেজি টমেটোর জন্য।
বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৯০ টাকা, ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে এক কেজি বরবটির জন্য, ঢেড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, একই দাম পটলের। পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
আকার ও মানভেদে এক হালি কাঁচকলার জন্য ক্রেতার পকেট থেকে যাচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।
মাছের বাজার
গত সপ্তাহে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল রুই মাছের দাম। সপ্তাহে কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রুই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, মৃগেল ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ২২০ টাকা, রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
গত সপ্তাহে কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল চিংড়ির দাম। মান ও আকারভেদে এ সপ্তাহে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে হাজার টাকা কেজি দরে।
মাংসের বাজার
বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে দেড়শো টাকা কেজি দরে। লেয়ার মুরগি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, ২০০ থেকে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। গরুর মাংস আগের মতই ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।