আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য লবণযুক্ত চামড়ার বেচাকেনা শুরু : নির্ধারিত দরের চেয়ে কমে কিনছে ট্যানারি মালিকরা

লবণযুক্ত চামড়ার বেচাকেনা শুরু : নির্ধারিত দরের চেয়ে কমে কিনছে ট্যানারি মালিকরা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৬, ২০২০ , ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : কোরবানির পশুর লবণযুক্ত চামড়া কেনাবেচা শুরু হয়েছে। তবে ট্যানারিগুলো সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কমে কিনছে বলে অভিযোগ করেছেন আড়তদাররা। যদিও ট্যানারি মালিকদের সংগঠনের নেতারা নির্ধারিত দরেই কিনবেন বলে আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন।

গতকাল রাজধানীর লালবাগের পোস্তার আড়তে প্রতিটি লবণযুক্ত বড় গরুর চামড়া ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, মাঝারি চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ছোট চামড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে বলে জানান আড়তদাররা। আব্বাস উদ্দিন নামে পোস্তার একজন আড়তদার জানান, এখনও পুরোপুরি বেচাকেনা শুরু হয়নি। আরও কয়েকদিন পরে বেচাকেনা জমে উঠবে। তখন দর ওঠানামা করতে পারে। তবে নগদে বিক্রির চেয়ে বাকিতে বিক্রির ক্ষেত্রে দাম এর চেয়ে বেশি হবে।

সরকার নির্ধারিত দর অনুযায়ী এবার ঢাকায় কোরবানির প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ৩৫ টাকা বর্গফুট ধরলে লবণযুক্ত একটি ২০ বর্গফুট গরুর চামড়া দাম পড়ে ৭০০ টাকা। এখন তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। পোস্তার আড়তে ঈদের দিন এই চামড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকায় কিনে লবণ অন্যান্য খরচ মিলে ১০০ থেকে দেড়শটাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। নগদ টাকায় কম লাভে বিক্রি করছেন আড়তদাররা। আর নির্ধারিত দরে ৪০ বর্গফুটের লবণযুক্ত বড় চামড়ার দর ১৬০০ টাকা হয়। এই আকারের চামড়া এখন এক হাজার টাকার কমেই ট্যানারিগুলো কিনছে বলে জানান আড়তদাররা। এতে একদিকে ট্যানারি মালিক কম দামের সুবিধা পেয়েছেন; অন্যদিকে আড়তদাররা লাভ পাচ্ছেন। অথচ এই চামড়ার হক গরিবের। তারা বঞ্চিত হয়েছেন। কোরবানিদাতারা চামড়ার দর পাননি। আবার পেলেও তা খুবই সামান্য। কোনো কোনো এলাকায় ক্রেতাই মেলেনি। কারণে অনেকে ফেলে দিয়েছেন।

কাঁচা চামড়া আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, বেশিরভাগ চামড়া সংরক্ষণ হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু ট্যানারি চামড়া কেনা শুরু করেছে। তবে এখনও পুরোদমে কেনাবেচা চলছে না, কারণে দর বলেনি। তিনি বলেন, আগামী শনিবার থেকে আড়তের চামড়া পুরোদমে কেনা শুরু হবে। তখন দর জানা যাবে। তিনি আশা করছেন সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই ট্যানারিগুলো চামড়া কিনবে। প্রতি বছর কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা দাম পান না। এবারও না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, পোস্তার আড়তদাররা প্রায় তিন লাখ চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেছেন। আজ (বুধবার) কিছু চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। আকিজ গ্রুপের একটি ট্যানারি প্রতিটি বড় চামড়া ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা দর দিয়েছে। যদিও ৬০০ টাকায় কেনা এই চামড়া সংরক্ষণে ২০০ টাকা খরচ আছে। এর সঙ্গে প্রতিটি চামড়ায় ১০০ থেকে দেড়শটাকা মুনাফা দিলে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায় কেনার কথা। কিন্তু নগদ টাকায় কেনায় কম দামে দিয়েছেন আড়তদাররা।

রিলায়েন্স ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, এবার ঢাকার রক্তমাখা চামড়া ৪০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে কিনেছেন তারা। বৃহস্পতিবার পোস্তার আড়ত থেকে কিনবেন। শুক্রবার নাটোরের চামড়া কিনবেন। শনিবার কুমিল্লায় কিনবেন। ছাড়া আগামী দুএকদিনে কিশোরগঞ্জসহ অন্য জেলার হাট থেকে কেনা শুরু করবেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার ভালো নেই। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত রপ্তানি অর্ডার মেলেনি। কারণে কারখানায় অনেক চামড়া মজুদ রয়েছে। এর পরও ঝুঁকি নিয়ে চামড়া কিনছেন।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, লবণযুক্ত চামড়া আগামী শনিবার থেকে বেশিরভাগ ট্যানারি কেনা শুরু করবে। কারণ এক সপ্তাহ পার হলে চামড়ায় ভালোভাবে লবণ লাগবে। এর পরেই কিনবেন অনেকে। এবার সরকার দর কমিয়ে নির্ধারণ করেছে। সরকার নির্ধারিত দরেই ট্যানারিগুলো কিনবে। এখন অল্প পরিমাণে কোথাও বিক্রি হতে পারে। তবে শনিবার থেকে চামড়া কেনাবেচার দর ঠিক বোঝা যাবে।