আজকের দিন তারিখ ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ইসি

সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ইসি


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ১৩, ২০২৩ , ৪:২২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : সব দলের অংশ নেবে কিনা, এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথ ধরে হাঁটছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিএনপি ও তার মিত্ররা অংশ নেবে না এমনটা ধরে নিয়েই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি। নির্বাচনী সামগ্রী কেনা, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত ও প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। ইসির কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে। অবশ্য সব দল না এলে নির্বাচন কতটা সংঘাতহীন রাখা ‘সম্ভব’ হবে সেই শঙ্কাও রয়েছে ইসির মধ্যে। যদিও এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির দাবি, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তারা সাংবিধানিক ক্ষমতার পুরোটাই প্রয়োগ করবে। সুষ্ঠু ভোটে তারা সরকার ও রাজনৈতিক দলের সহযোগিতাও কামনা করেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার সাত মাসের মাথায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে। ইতোমধ্যে ঘোষিত রোডম্যাপের বেশিরভাগ কাজ গুছিয়ে এনেছে। অবশ্য সব দলের আস্থা অর্জনের যে বিষয়টি ইসির রোডম্যাপে ছিল তা দৃশ্যত এখনও সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী দেড়শ’র মতো আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার কথা থাকলেও আর্থিক সংকটে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। পরে পুরোটাই ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনি কাজের জন্য বেশ কয়েক ধরনের সরঞ্জাম দরকার হয়। এর মধ্যে ব্যালট পেপার, স্ট্যাম্প প্যাড, গালা, মনোনয়ন ফরম, অফিসিয়াল সিল ( গোল সিল), মার্কিং সিল (ব্যালটে মারার সিল), ব্রাশ সিল (সিলগালা করার জন্য পিতলের সিল মোহর), অমোচনীয় কালির কলম, ছোট-বড় দুই ধরনের চটের ব্যাগ, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও বাক্সের লক ইত্যাদি। এছাড়াও একাধিক রংয়ের কলম, খামসহ আরো কিছু সামগ্রী প্রয়োজন পড়ে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনাকাটার কাজও শেষ পর্যায়ে। এ মাসের মধ্যেই শতভাগ কেনাকাটা সম্পন্ন হবে। এসব সামগ্রীর মধ্যে প্রায় সবগুলোরই দরপত্র ও কার্যাদেশ আগেই সম্পন্ন হয়েছে। বেশ কিছু সামগ্রী ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। অমোচনীয় কালির কলম কেনা নিয়ে কিছুটা জটিলতা হলেও গত সপ্তাহে সেটার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সূত্র জানায়, নির্বাচনের জন্য ৮০ হাজার ব্যালট বাক্স কেনা হচ্ছে। ব্যালট বাক্স ও ঢাকনা আগে বিদেশ থেকে আমদানি হতো। তবে এবার দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই এগুলো কিনছে ইসি। অন্যদিকে সরকারি মুদ্রণ সংস্থার ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ৬১ হাজার রিম বা ৩২ লাখ ২০ হাজার দিস্তা কাগজ কেনা হচ্ছে। এ কাগজ দিয়ে তৈরি হবে ব্যালট পেপার, বিভিন্ন ধরনের খাম ও প্যাড। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময় শেষ হলেই ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর এই প্রশিক্ষকরা নির্বাচনি কর্মকর্তাদের (প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার) প্রশিক্ষণ দেবে। এছাড়া প্রশিক্ষণ চলছে নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে নির্ধারিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা/উপজেলা নির্বাচনি কর্মকর্তাদের। আজ থেকে শুরু হচ্ছে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ। রোডম্যাপের ঘোষণা অনুযায়ী নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল ও ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে হবে ভোটগ্রহণ। অবশ্য ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট করবে এমন তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। জানা গেছে, জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভোটের তফসিলের ব্যাপারে অবহিত করবে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। ভোটের পুরো প্রস্তুতি ইসির থাকলেও এখনও তারা অপেক্ষা করছে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোর জন্য। ইসি প্রত্যাশা করছে, রাজনৈতিক সমাঝোতার মাধ্যমে তারা ভোটে ফিরবে। তবে সর্বশেষ কোনও সমঝোতা না হলে সংবিধান অনুযায়ী ভোটের পথে হাঁটবে তারা। সেক্ষেত্রে কোনও দল নির্বাচনে না এলেও তাদের কোনও কিছু করার থাকবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য কমিশনাররা এরইমধ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।