আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য সাইডডোর রেল কার্গো চালু হচ্ছে বেনাপোল বন্দরে

সাইডডোর রেল কার্গো চালু হচ্ছে বেনাপোল বন্দরে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৭, ২০২০ , ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি সচল রাখতে বিকল্প হিসেবে রেলপথে চালু হচ্ছে সাইডডোর রেল কার্গো। খুব দ্রুত এ রুটে এফসিএল কন্টেইনারও চালু হবে বলে জানা গেছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী এ খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া তিনি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, বন্দর ও রেল কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে এরই মধ্যে রেলপথের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধের জন্য ভারতে লকডাউন থাকায় পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন মাস ধরে স্থলপথে আমদানি-রফতানি বন্ধ রেখেছে। এতে একদিকে যেমন চরম লোকসানের কবলে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি আমদানি বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করতে না পারায় দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সচল করা সম্ভব হচ্ছে না। এ মুহূর্তে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায় বেনাপোল রেলপথে সাইডডোর রেল কার্গো এবং এফসিএল কন্টেইনার চালু বাণিজ্যিক খাতের প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, স্থলপথে আমদানি বন্ধ থাকায় কেবল ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন না, সরকারও শত শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেনাপোল রেলপথে সাইডডোর কার্গো চালু হলে ব্যবসায়ীরা সব ধরনের পণ্যের আমদানি করতে পারবেন। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি সরকারেরও রাজস্ব আয় স্বাভাবিক থাকবে। ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট, এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, দেশের স্থলপথে যে পণ্য আমদানি হয়, তার ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। করোনা ছাড়াও হরতাল, অবরোধ, শ্রমিক অসন্তোষসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় স্থলপথে সময় মত পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হয়। সাইডডোর রেল কার্গো ও এফসিএল কন্টেনার চালু হলে ব্যবসায়ীরা এমন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারত অংশে পার্কিংয়ের নামে এক শ্রেণির মানুষের অবৈধ অর্থবাণিজ্যের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থলপথে বাণিজ্যে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এ সমস্যা আরো তীব্রতর হচ্ছে। আটকে থাকা পণ্যে কোটি কোটি টাকা লোকসানের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও বার বার কথা দিয়েও ভারতীয়রা পণ্য দেয়নি। এসময় আমাদের বিকল্প ভাবনা ভাবতে হয়। ব্যবসায়ীদের দাবিতে বাণিজ্য সচল ও সরকারের রাজস্ব আয় স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্যিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ করি। এসময় সরকারি সংস্থাগুলো সাইডডোর রেল কার্গো চালু এবং বেনাপোল রেলপথে এফসিএল কন্টেনার চালুর গুরুত্ব অনুধাবন করে বাণিজ্যে সাড়া দিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দুই-একদিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য চালু হবে। এছাড়া এফসিএল কন্টেইনারও খুব দ্রুত চালু হবে জানান তিনি। বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, তার জানা মতে খুব দ্রুত বেনাপোল বন্দরে রেলপথে সব ধরনের পণ্যের আমদানি শুরু হবে। রেলপথে পণ্য প্রবেশের পর তা আপাতত বন্দরের হেফাজতে থাকবে। পরে কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম শেষে শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস নিতে পারবেন। উল্লেখ্য, এর আগে বেনাপোল রেলপথে ভারত থেকে সরাসরি শিল্প কারখানার কিছু কাঁচামাল, পাথর ও জরুরি কিছু খাদ্য দ্রব্য আমদানি হয়ে আসছে। যা স্থলপথে বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ। আমদানি পণ্য বেনাপোল স্টেশনে পৌঁছানোর পর সরাসরি তা নওয়াপাড়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের খালাস করতে হতো। ফলে দীর্ঘ সময় আর খরচ বৃদ্ধির কারণে এ পথে ব্যবসায়ীদের আমদানিতে আগ্রহ ছিল কম। এখন সাইডডোর রেল কার্গো সিস্টেমের ফলে সব ধরনের পণ্য বন্দরে আনলোড ও এখান থেকে ব্যবসায়ীরা খালাসের সুযোগ পাবেন। এতে যেমন বাণিজ্যে গতি ফিরবে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও কয়েক গুণ বাড়বে বলে ধারণা সংশিষ্টদের।