২ মাস পরই বদলে যাবে ঢাকা
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ১২, ২০২৩ , ৪:২১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
সানি আজাদ : আগামী দুই মাস পরই বদলে যাবে রাজধানী ঢাকার চেহারা। সেপ্টেম্বরে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম পর্বের পাশাপাশি চালু হচ্ছে ১৪ লেনের পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে। অক্টোবরে কথা রয়েছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প চালুর। আর সেই মাসের শেষে উত্তরা থেকে মতিঝিলে ছুটবে স্বপ্নের মেট্রোরেল। এতে যোগাযোগ খাতে গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আধুনিক ঢাকার অন্যতম গেটওয়ে হিসেবে ধরা হচ্ছে দেশের প্রথম ১৪ লেনের মহাসড়ক পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েকে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অধীনে নির্মিত নান্দনিক এ সড়ক পথের শেষ সময়ে চলছে প্রস্তুতি। সেপটেম্বরে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের চিরচেনা অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি দিতে সেপ্টেম্বরেই চালু হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। মুহূর্তে চলাচল করা যাবে ফার্মগেট থেকে তেজগাঁও হয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত। এ ছড়া অক্টোবরেই বিআরটি প্রকল্পের আংশিকভাবে চালুর কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। যা দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটাবে। নিশ্চিত করবে ঢাকা-গাজীপুর পথে চলার স্বাচ্ছন্দ্য। তবে রাজধানীবাসীর সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ অক্টোবরের শেষেই মেট্রোরেল পৌঁছাবে মতিঝিল পর্যন্ত। দুই মাসের মধ্যে এই মেগা প্রকল্পগুলো চালু হলে শহরের যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হাওয়ার পাশপাশি যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তনের ইঙ্গিত বিশেষজ্ঞদের। তবে প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা নিতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনায় জোর দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, মেট্রোরেল বাদে বাকি প্রকল্পের সুফল পেতে গুরুত্ব দিতে হবে ট্রাফিক ব্যবস্থপনায়। বিশেষ করে এক্সপ্রেসওয়ের ওঠানামার স্থানে ঢেলে সাজাতে হবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান বলেন, এ প্রকল্পগুলো গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে। বিশেষ করে যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তবে এই যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৩২টি র্যাম সড়কের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করবে, এই র্যামগুলোতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা দরকার। কারণ এই র্যামগুলোতে যানজটের একটা শঙ্কা থেকেই যায়। গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, যানবাহন চলাচলের জন্য যে অবকাঠামো দরকার, ঢাকায় সেটার খুবই অভাব রয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলো চালু হলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। তবে এর সুফল পেতে হলে ট্রাফিকের ক্ষেত্রে অটোমেশন দরকার। এতে করে খুব তাড়াতাড়ি গাড়িগুলো ডিসপাস হতে পারবে। এ ছাড়া গাড়ি ওঠার সময়ও যেন লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে না হয়, সেটার ব্যবস্থাপনা দরকার। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, নগরের ফুটপাত দখলমুক্ত করা, ফিটনেসবিহীন যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেই অনেকটা সহজ হবে রাজধানীবাসীর জীবনমান। রাজধানীর যানজট নিরসনে সেপ্টেম্বরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ চালু হবে। রেল লাইন ধরে এ উড়াল সড়ক শুরু বিমানবন্দর এলাকার কাওলা থেকে সরাসরি গিয়ে মিলবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে। প্রকল্পের নথি অনুসারে জানা যায়, সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে (পিপিপি) তিন ধাপে উড়াল সড়ক প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপ বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত। তৃতীয় ধাপ মগবাজার রেলক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। এই উড়াল সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রকল্পটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। আধুনিক ঢাকার নতুন গেইটওয়ে হতে যাচ্ছে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে। দেশের প্রথম ১৪ লেনের মহাসড়ক, যার ৮টি এক্সপ্রেসওয়ে। নান্দনিক এ সড়ক ধরেই তৈরি হচ্ছে পূর্বাচল স্যাটেলাইট সিটির নকশা। মহাসড়কের দুপাশে রয়েছে ১০০ ফিট খাল। রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার পয়েন্ট থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার এ সড়কে থাকছে পাঁচটি এ্যাডগ্রেড ইন্টারসেকশন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধীনে নির্মিত হচ্ছে এ সড়ক পথ। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই এ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।