৪ হাসপাতাল ঘুরেও ভর্তি হতে পারেনি : শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল রিফাত
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১, ২০২০ , ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
খুলনা প্রতিনিধি : লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিল স্কুলছাত্র রিফাত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শারীরিক সমস্যার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নিতে হয়। কিন্তু খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একে একে চারটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হলেও কেউ তাকে ভর্তি নেয়নি। শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় সন্ধ্যার দিকে মারা যায় খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের এই স্কুলছাত্র। রিফাত খালিশপুর হাউজিং বিহারি ক্যাম্প নং-১-এর বাসিন্দা মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে। রিফাতের নানা কলিমুদ্দীন জানান, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে তার নাতিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক নেই বলে তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এদিন কাগজে ওষুধ লিখে দিয়ে পরে সমস্যা হলে বুধবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। এরপর তিনি রিফাতকে নিয়ে খালিশপুর ক্লিনিকে যান। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলে দেয় কোনো চিকিৎসক নেই। রোগী ভর্তি করা যাবে না। এরপর তাদের পরামর্শে রিফাতকে সার্জিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তাকে ভর্তি না নিয়ে ময়লাপোতা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারাও একইভাবে রোগীকে ভর্তি না নিয়ে ফেরত দেয়। এভাবে হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে রিফাত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যায়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিফাতের লাশ খুলনা মহানগরীর গোয়ালখালী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান কলিমুদ্দীন। এ ব্যাপারে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শেখ আতিয়ার রহমান জানান, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাবেন না সেরকম পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।’ মহানগরীর খালিশপুর ক্লিনিকের এমডি মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লিভার সিরোসিস রোগীর জন্য আইসিইউ দরকার হয়। জটিল অবস্থায় থাকার কারণেই ওই রোগীকে ভর্তি না নিয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে সার্জিক্যালে রেফার করেছেন হয়তো। এটা আমাদের ক্লিনিকের নিয়ম মেনেই করা হতে পারে। তারপরও বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা হবে।’ জানতে চাইলে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, কোনো হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা বন্ধ করা হয়নি। তবে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনার কারণে মানবিকতা কমছে। দায়বদ্ধতা থেকে এ রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া উচিত ছিল। কেন এই রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হলো না তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান সিভিল সার্জন।